সোনার মানুষ গোপাল সাধু
⭐⭐⭐⭐⭐
⭐⭐⭐
⭐
ভক্ত-প্রেম সঙ্গীত
-: রচনায় :-
শ্রী রসিকলাল মিস্ত্রি
উৎসর্গ পত্র
শ্রী হরিগুরুচাঁদ, হে প্রভু গোপাল চাঁদ, পতিত আবাদকারী।
মরা দেহে দিলে প্রাণ, বিনা চাউলে অন্নদান, করিয়াছো নরদেহধারী।।
আমার এই হৃদাসনে, বসে তুমি নিরজনে।
যে সকল গান প্রভু করালে রচনা।।
তাই আমি তোমার পদে, উৎসর্গ করিলাম সাধে।
তোমার পুষ্পে তোমারি অর্চনা।।
চরণ ধুলি প্রার্থী
কাঙ্গাঁল রসিক লাল মিস্ত্রী
১) নমস্তে শ্রীগুরু গোপাল চাঁদের শ্রীচরন ২) জয় হরি শ্রী
গোপাল চাঁদের জয় ৩) দীনহীন কাঙ্গালের গোপালচাঁদ ৪) যামিনী অবসান, খুলিয়া মনো-প্রাণ ৫) আমার অপবিত্র দেহ গোপাল পূজায় লাগলো না ৬) হৃদয় আল আমার নালিশ লইয়া ৭) গোপাল চাঁদ কাঙ্গালের
বন্ধুরে ৮) আমার মনের অন্ধকার
ঘোচাও ৯) কত জন্মের অপরাধে ১০) গুরু তব দয়া আর নাই
তুলনা রে ১১) আমি কেমন করে পাবো ১২) হরি কি জানে তবে লীলা ১৩) আমার প্রাণের গোপাল
বিনে ১৪) আমার হরিচাদের প্রেমের
নায় ১৫) ও সখিরে ধন্য ধন্য সাধু
রাম চরনে ১৬) দয়াল গোপাল চাঁদের
নামের গুনে ১৭) এমন সোনার পুতুলী এল ভাই ১৮) দয়াল গোপাল চাঁদের
মহিমা অপার ১৯) শ্রীধাম ওড়াকান্দি হতে
মানুষ এলো রে ২০) কেবা জানে হরি মহিমা তোমারি ২১) হরি কাঙ্গাল বেশে বঙ্গদেশে ২২) কি বাজান এই হরি মহিমা তোমারি ২৩) কি কব ভাই গোপালের কথা ৪৭) ও দরদী বিহনে জীর্ণ দেহ
ধরিয়া ৪৮) মন তোর দিনতো গেল বইয়া ৪৯) হরি তোমার প্রেমের যোগ্য ৫০) শ্রী হরির সাধন ভজন ৫১) তোমায় কেমনে চিনিবো গুরু ৫২) হরি যে খাটনি দিয়াছো আমায় ৫৩) মন তুই ভাবছো কি আর বসে রে ৫৪) গুরু আর কত পরাবে আমায় ৫৫) ছেড়ে সব অন্য ভাবনা ৫৬) মন তোরে গুরু দিল যে ধন ৫৭) গুরু আমায় নিবি কি সেই ৫৮) মনরে আমার বেহুসারী, এখনও তুই বলরে হরি ৫৯) যাওয়া হবেনা গোপালচাঁদ রূপ দরশনে ৬০) কত দয়া করছো গুরুচাঁদ ৬১) গুরু তোমার সাধন ভজন ৬২) শুধু মুখের কথা বলি কাজি নয় ৬৩) কি কাজ আছে জেনে মিছে ৬৪) মিছে কেন কানা কানি ৬৫) তোরা তো বলিস সবে ভাই ৬৬) আমার কর্মদোষে দেহ জমি ৬৭) ভালো যদি চাওরে মন ৬৮) বোয়ালের কামড়ে বড় জ্বালা হয় ৬৯) এখন কেন রইলি দেহে ৭০) সেদিন আমার নাইরে বন্ধু ৭১) মদ না বাঘে ধরে নিয়ে
গেল |
২৪) হরি আমি কোথায় যাবো কোথায়
গিয়ে ২৫) কেন আমায় ভালোবেসে
ছিলে ২৬) আমার মন তুমি কেন বুঝনা
রে ২৭) কেউ যদি মোর বান্ধব রে
থাকো ২৮) আমার মন-মাঝি তুই কেমন ধারা
নাইয়া ২৯) যার জন্য যে সকল ওতেই
জিয়ারে ৩০) আর কি পাবো রে আমার গোপাল
দরশন ৩১) আমি দেশ বিদেশে ঘুরে
বেড়াই ৩২) হারে ও আমার ভাঙা
নায়ের মাঝি ৩৩) পোরা প্রাণ জুড়াবে
কিসে ৩৪) কোথায় যাবো রে যাবো রে
আমার ৩৫) দুখে জনম গেল আর কী সুখ
পাব ৩৬) এই কি ছিল রে গোপাল
তোমারই মনে ৩৭) আমার মানব জনম গেলো রে
বিফলে ৩৮) আমি পাপ করেছি রাশি
রাশি রে ৩৯) আমি সাবধানে
উঠিয়ে ওরে মন ৪০) আমার মনে ভাবি ভালো হবে ৪১) আমার হারানো ধন আর কি পাবো ফিরে ৪২) তোরা তো ভাই বলিস মন্দ ৪৩) আমার এ জীবনে ঘুচবে কি আর ৪৪) আমি দেখলেন ভেবে এই ভবে ৪৫) হায়রে ও কুলের কান্ডারী ৪৬) হারিও এমন সুজন পাইয়া ৭২) ওরে আমার অবোধ মন ৭৩) অবোধ মন তোরে কই ৭৪) কপাল আমার দেশে এসেছে ৭৫) ওরে ব্যথা বোঝো আর কি ব্যথিত আছে ৭৬) কপালে দুঃখ থাকলে কে কারে সুখ ৭৭) আছিস সাড়ে তিন রত্তিতে দিতে ভাণ্ড করা ৭৮) ও গোপাল চাঁদ রে যেওনা গো ৭৯) তব দয়া বিনে গুরু সুফল ফলে কার ৮০) যদি সতীত্ব রাখিবি রে ৮১) গোপালচাঁদ রে-সারা জনম
গেল ৮২) সুখ আর দুঃখ দুই ভাই মিলে ৮৩) কি সুন্দর ঘর বেঁধেছো গুরু ৮৪) কোন গুণেতে পাবো তোমায় ৮৫) একবার ফিরে দেখে যাওরে ৮৬) আমায় কি করেছো হরি ৮৭) এমনি করে ছেড়ে যাবে গো ৮৮) বিদেশ কেনো থাকবি রে মনা ৮৯) তোমার যা ইচ্ছা পার করিতে ৯০) আমি মিছে কেন জন্মেছিলাম ৯১) কর মন গোপাল পূজার আয়োজন ৯২) সুখ হল না এ জনমে ৯৩) হই আমি তোমায় চিনলেম না রে ৯৪) আমি দেখলেম এ সংসারে ৯৫) বিদেশে মনের মানুষ নাই ৯৬) ওড়াকান্দি হতে হরিচাঁদের আগমন |
৯৭) গোপাল চাঁদের আগমনে ৯৮) কি হবে তোর শুচিপনায় ৯৯) গুরু নিষ্ঠা নামে রুচি হল কই ১০০) তোরা কি প্রেম করবি পাগল হবি ১০১) আমার মন-পাখি কার মায়ায় ভুলে ১০২) দয়াল গুরু বলে কাঁদেনা আমার মন ১০৩) শ্রী শ্রী বিষ্ণুপ্রিয়া খেদ ১০৪) নিবা নির্বান্ধব রে ১০৫) সুখী আর কি পাবো পরান গোপালেরে ১০৬) তোরা প্রেমের খেলা খেলবি যদি ১০৭) দাও হে গুরু চরণ তরী ১০৮) আমি আপন করে না দোষে ভূগী ১০৯) ব্যথা কার কাছে জানাই দরদী ১১০) কেমনে রইলিরে বসিয়া |
১১১) হরি ভক্তগনের শ্রী চরণে ১১২) এমন দিন যে আর পাবি মন ১১৩) ওমা লক্ষ্মী গন তোমরা স্বামীর
পদে ১১৪) ১১৫) ১১৬) ১১৭) ১১৮) ১১৯) ১২০) ১২১) ১২২) ১২৩) ১২৪) |
"বন্দনা"
নমস্তে শ্রীগুরু গোপাল চাঁদের শ্রীচরণ,
আমি জানিনা ভকতি স্ততি গুরু, আমি অতি অভাজণ
১) নমঃ শ্রীপদ-পঙ্কজে, রাখিব হৃদয় সরোজে।
মণ প্রাণ অলি সেজে, করে যেন প্রেম-মধু পাণ ।।
২) তোমার গান বিণা ভক্তি, গাহিতে বা কার শক্তি।
তোমা বিনা পঞ্চশক্তি, না পারে ধরিতে তান ।।
৩) পাপে এদেহ অশুচি, কিসে হবে তব ণামে রুচি।
দয়া করে কর প্রভুশুচি, দিয়ে আমার প্রেম ভক্তি ধন ।।
৪) গাহিতে জানিনা হরি তবু যে বাসনা করি ।
এ দিন রসিকে দিয়ে চরণ তরী, হরি, পুরাও দীনের আকিচঞ্চন।।
১ নং গান, "বন্দনা"
জয় হরি শ্রী গোপাল চাঁদের জয় ।
জয় কাঞ্চন জননী প্রেমরুপং আহ্লাদিনী, গোপাল চাঁদের বামেতে রয়।।
১) জয় শ্রীরামচন্দ্র সে বড় ভাগ্যবন্ত, কালীমাতার জয় জয়।
জয় হরষিত, কাশীনাথ, ভূপাল, দেপালের জয় জয়।।
২) জয় বিপিন চাঁদ, জয় শ্রীপূর্ণ চন্দ্র, অভয় চাঁদের জয়।
জয় রাইচরন, অভয়চরণ, সাধু হরকুমারের জয়।।
৩) জয় শ্রীনিবারন জয় সখীচরন, বনমালীর জয়।
সন্তোষ গোসাই, শিবচন্দ্র গোসাই, কুমুদ গোসাইর জয় জয়।।
৪) জয় শ্রীসতীশ গোসাই, জয় পরিক্ষীত গোসাই, কাণাই সাধুর জয়।
নকুল গোসাই, মণিমোহন, শ্রীকান্ত পণ্ডিতের জয়।।
৫) জয় শ্রীলালচাঁদ গোসাই, জয় হেম গোসাই, শুকচাঁদ গোসাইর জয় ।
শ্রীকান্ত কেশবচন্দ্র অভিলাষের জয় জয়।।
৬) জয় শ্রীকালীচরণ ঠাকুর, জয় শ্রী গণেশ ঠাকুর পাচুরামের জয়।
পুলিন গোসাই, সুর্য গোসাই, রাজেন জগবন্ধূর জয়।।
৭) জয় শ্রীগোপাল ভক্তগণ, বন্দি সবার চরণ আনন্দ হ্নদয়।
এবার দয়া করে রসিকেরে দিও সবে পদাশ্রয়।।
২ নং গান, " বন্দনা "
হীন কঙ্গালের গোপাল চাঁদ প্রর্থনা চরণে।
আমার সহস্রদল কমল মাঝে, বসে বজাও আমার হৃদয়বিষে।।
১) প্রেমরূপহ্লাদিনী , লয়ে তব বামে-আমার মন মুগ্ধ কর তব নামে প্রেমে গো।
আমি করি যেন শ্রবণ তব জয় গুণ গুণ-আর কিছু চায় না যেন এ পরাণ।।
২) আমার কাম ক্রোধ আদি বাণী নিরবধী , তব সেবায় মত্ত থাকুক নিরবধি ঘোর।
আমার কুয়াশা কুরুচী কর প্রভু শুচি, তোমার ভুলে না যাই কোন দিনে।।
৩) আমার তম মাখা আঁখি,থাকি গোর আঁধারে , তুমি বিনে প্রভু কে ডাকে আমারে গো। ভবে আণিয়াছ তুমি, কারে কব আমি, তোমার মত আর কে আছে এ ভুবনে।।
৪) আমার ইন্দ্রিয়াদি সকল, হইয়ে প্রবল, দিনে দিনে এ দেহ করে নিল দুর্বল গো।
কপাল পতিত র"লেম চিরকাল, তোমায় হেরি যেন দু'নয়নে।।
৫) তোমার গোপাল ণামটি শুনে, সর্ব জীবগনে, প্রেম-বারিধারা বহে দু'নয়নে গো। এ দিন রসিক বলে তুমি, ত্রিজগতের স্বামী, আশা পুরাও যদি নিজগুণে ।।
৩ নং গান "প্রভাতী" তাল- রাগ- ভৈরবী ।
অবসান, খুলিয়া মন-প্রাণ, গোপালচাঁদ প্রভাতী গাও হে ।
প্রভাতী গাও হে,প্রভুর চরনে শরনে ল ওহে ।।
১) হৃদি সিংহাসন মাঝে প্রভু গোপালচাঁদকে বসাও হে ।
কাঞ্চনদেবী মাতির মিলন রে ।।
২) দু'নয়নের জলে প্রভুর চরন ধোয়াও রে ।
চন্দন সযতনে প্রভুর শ্রীচরনে সজাও রে ।।
৩। চন্দ্র জিনি বদনখানি, সুধামাখা বানী রে ।
যুগল যেন, দীপ্ত দিনমনি রে ।।
৪) সুবলিত বহুদ্বয় , রক্তরাগ কর রে ।
নখে শোভ যেন কোটি চন্দ্র উদয় রে।।
৫) শ্যামল সুন্দর বরণ, প্রভুর অঙ্গের কিরন রে।
চরন যুগল যেন রক্ত কোকনদ রে।।
৬) শ্রীহরি গুরুচাঁদ মিশে, প্রভু গোপাল অবতার রে ।
নাম স্মরনে উদয়, সর্ব বিঘ্ন বিনাশন রে।।
৭) শ্রীমুখের মধুর বানী সবে কর হরিধ্বনি রে ।
অলস পরিহাস হরি বল রসিকের পরিনে ।।
৪ নং গান, তাল-কাহার্বা, রাগ- বেহাগ ।
অপবিএ দেহ গোপাল পুজায় আর লাগল না ,
মনের মলিনতা আর গেলরে না ।। (২)
১) গোপাল আমার সুপবিত্রময়, প্রেম নগরে বসত করে পদ্মগন্ধ গায় ।
কেমন করে যাব তথায় রে-(হারে) আমার কামের গন্ধ আর গেল রে না ।।( ২) ২) গোপাল পুজা সামান্য ত নয়-দেহ- মন প্রাণ গোপাল পদে দিতে হয় ।
সব দিয়েছি মায়ার সেবায় রে - গোপাল পুজার জন্য রাখলেম না।।(২)
৩) পোড়া নয়নে মোর ণাই রে প্রেম-বারি গোপাল বলে প্রাণ কান্দে না উপায় কি করি।
মন আগুনে জ্বলে মরি রে- আগুন জ্বলে গেলে আর নিভে না রে।।(২)
৪) আমার মাণব জনম যায় রে বফলে, আগে তো জানি না এত দুঃখ কপালে।
রলেম মোহ মায়ায় ভুলে রে সাধু সঙ্গ করা আমার হ' লো না রে।।(২)
৫) কত ডেকে গেল গোপাল চাঁদ, মায়াপাশে বন্দি হয়ে হারালেম পরান।
রশিক তাঁর পেলো না সন্ধান রে- চাঁদের অভয় বানী আর শুনলো না রে।।(২)
৫নং গান
দয়াল আমার নালিশ লইও, সুখে কিংবা দুঃখে থাকি আমার পানে চাইও
ব্যথিত হারা কপাল পোড়া, তুমি আমার সথে সাথী হইও।।(২)
২) ও দয়াল রে- আমি কুপথগামী হলে তুমি , টানিয়া ফিরাইও তোমার সুপথে চালাইও।
প্রেমডোরে বেন্ধে মোরে চরনে রাখিও।।(২)
৩) ও দয়াল রে- আমার অশুচি এই দেখানি শুচি করে নিও তোমার প্রেমের বাতাস দিও।
পাপ- আগুন পোড়া দেহে শান্তিজল ঢালিও।।(২)
৪) ও দয়াল রে -আমার এ দুরন্ত কাম- কালীর দমন করিও তোমার নাম বাঁশি শুনাইও।
মতি যশোমতির কোলো গোপাল বেশে রইও।।(২)
৫) ও দয়াল রে - এ দিন রসিক বলে গোপাল আমার মাথায় বসিও, তোমার যা ইচ্ছা করিও।
জন্মে জন্মে পাই তোমারে, এই দরখাস্ত নিও।।(২)
৬ নং গান, তাল - কাহার্বা, রাগ - বহাগ।
গোপালচাঁদ কাঙ্গালের বন্ধুরে দয়াল অনাথের সাথী রে।
তুমি আসবা কি মোর এই ভঙ্গা ঘরে, তোমার ভজন না জানি রে।।
১) বসিতে আসন নাই রে দয়াল, শূন্য আগারে
তোমায় তুষিতে নাই কোন ধন আমার নয়নের জল রে ।।
২) যার নাই কোন ভাব সকল অভাব রে, দয়াল থেকে এ সংসারে
গুরু তব সেবার যোগ্য নয় সে, বিফল হয় আশা করে ।।
৩) এমন কোন কাজ করি নাই রে দয়াল, তোময় পাবো ফিরে।
তুমি দেখা দিয়েছিলে নাকি আমার জননীর জঠরে।।
৪) রসিক বলে গোপাল বেশে ররে, দয়াল যাও সকলের ঘরে।
আমি যেমন মানুষ তেমনি থাকি, তাতে দুঃখ নাই মোর অন্তরে ।।
৭ নং গান, তাল - কাহার্বা , রাগিনী - বেহাগ ।
আমার মনের আন্ধার ঘুচাও রে দয়াল করুনা দানে
আমার দিয়ে ঞ্জাননেত্র, করো সুপবিত্র, অপবিত্র এ জীবনে ।।
১) আমি স্বচক্ষে দেখিতে পাই, তুমি সকালারে দিলে ঠাঁই আমি অভাগা এ ভুবনে ।
পতিতেরি তরে (২) এলে বারে বারে এ পাপির কি পড়ে না মনে ।।
২) তুমি মরা দেহে দিচ্ছ প্রান ,তার কি থাকে কোন ঞ্জান, যা করো তূমি নিজ গুনে ।
দেখিয়ে জীবিত (২ ) কামক্রোধে মত্ত হারলে বুঝি আমার সনে ।।
৩) আমার কুয়াশা কুবৃত্তি , হ'লো না নিবৃত্তি, জ্বলতেছি প্রবৃত্তি আগুনে ।
আমায় দেও হে প্রে - বিন্দু (২) ওহে কৃপাসিন্দু বন্ধু নাই তোমা বিনে ।
৪) যে সুখেতে আছি আমি তাও সকল জানো তুমি , অন্যে তা জানিবে কেমনে ।
আমার মনে যে অশান্তি (২) গেল নারে ভ্রান্তি শান্তি নাই এক ক্লান্তি মনে ।।
৫) রসিক বলে গোপাল, জানি তুমি দয়াল , আমায় দয়া করবে বা কোন গুনে ।
আমার নাই ভক্তি - শক্তি (২) কিসে পাবো মুক্তি জনম গেল আকারনে ।।
৮ নং গান, তাল রাগিনী -
জন্মের অপরাধে এত দুঃখ কপালে ।
আমি এমন কপাল পোড়া , আমি এমন কপাল পোড়া ,
সাথী ছিল যার , তরাও গেল আমায় ফেলে ।।
১) যখন সুখ আমার , কিছু বুঝি নাই তাহার তখন ছিলাম মায়ের কোলে -
আমি পাইয়ে যৌবন সব দিয়ে বিসর্জন , পুর্বের কথা গেছিগো ভুলে ।।
২) আমার থাকত যদি সেই ভাব , হতো ণা এ কু - স্বভাব, অভাব হতো না কোন কালে ।
আমার দেখিয়ে এই পোড়া মুখ , কেউ পাবে না কোন সুখ , কাঁদিতে নারি হরি বলে ।।
৩) ভবে আমি মহাদোষী , কারে আমি দোষী , আমার দোষ যাবে কি নাম নিলে ।
আমি নিজ কর্ম দোষে বেড়াই দেশবিদেশ , ডুবে মরি ঘোর অকুলে ।।
৪) আমার ছাড়ল মাতাপিতা , ছাড়ল বন্ধু ভ্রাতা এমন বিপদের কালে ।
আমার মনের আগুন জ্বালছে দ্বিগুণ, জুড়ায় না আর জ্বলে গো জ্বলে ।।
৫) রসিক বলে আমার , গেল না রে বিকার , বন্দী পারে মায়া জালে ।
আমি এমনি অন্ধ গেল না সন্ধ, কাছে পেয়ে প্রাণ গোপালে ।।
৯ নং গান, তাল - কাহার্বা, রাগ - বেহাগ
গুরু তব দয়ার নাই তুলনা রে ওরে-আমার পরম দয়াল
এত দয়া সাজবে কেনে-আমি যে দীনহীন কাঙ্গাল ।।
১) আমার সুখে তুমি, দয়াল আমার দুঃখে দুঃখী তুমি, এ জীবনের স্বামী ।
ভক্তি শূন্য হলেম আমি- তাইতে মোর নয়নে নাই জল।।
২)বিপদ এসে দেখা দিলে , দয়াল তুমি এসে করো কোলে, দুরে যায় সব চলে ।
এত দয়া এ কঙ্গালে - তুমি যে অসময়ের সম্বল ।।
৩) আমি যে অধম দুরাচার, হারে ধন্য গুরু দয়া তোমার, দয়ার নেই পারাপার ।
ক্ষুধা পেলে দিচ্ছ আহার তুমি পিপাসায় দিও জল ।।
৪) গোপাল চাঁদের নামের গুনে কত মরা বেঁচে রইল প্রানে, দেখলেন দু'ণয়নে ।
রসিক বলে এ জীবনে, ভেবে দেখলাম না প্রান গোপালে ।।
১০ নং গান, তাল - গড়খেমটা, রাগিনী - সিন্ধু ।
আমি কেমন করে পাবো তারে ওগো সজনী ।
আমি আর কি দেখা পাবো না তার রাঙ্গা চরন দু'খানি ।।
১) ভালবাসার এই কি পরিণাম , ভালবেসে অবশেষে আমার মন হল বাম ।
দিয়ে ভালবাসা ,আশার বাসা , পোড়াস রতনমনি ।।
২) এই কি ছিল কপালের লিখা , জনমের মত ছেড়ে যাবে পাবো না আর দেখা ।
আমি আর কতদিন থাকবো একা সাজিয়ে অনাথিনী ।।
৩) কাজ কি আমার থাকি এ কুলে যার জন্যেতে থাকবো কূলে সে গেল চলে ।
আমার এ কূল ও কূল দু'কুল গেল হলেম কলঙ্কিনী ।।
৪) আমি হলেম না তার মনের মত- তাইতে যেন মন দুঃখে পেয়েছে কত ।
কয় নিই দুঃখ কথা , মনে-ব্যথা থাকতো দিবি - রজনী ।।
৫) রসিক বলে ক হয় বাঁছিলে যার মাতায় ছাড়ে
পিতায় ছাড়ে ছাড়ে সকালে ।
দেখলেম দুঃখের সময়, সব ছেড়ে যায় ছাড়ে গোপাল চাঁদমনি ।।
১১ নং গান, তাল-বিষম একতালা, রাগিনী - খিম্বাজ।
হরি কে বা জানে তব লীলাখেলি ।
যারে ব্রম্মাদি দেবগনে পায় না ধ্যানে, কিঞ্চিত তত্ত্ব তব জানে ভোলা ।।
১) এক মাটি জলে , বৃক্ষ আদি লতা, কটু চুকা ,মিঠা আর কত তিতা ।
একই রজে বীর্যে অন্ধ , খঞ্জ বোবা - পন্ডিত , বোকা আর কালো ধলা ।।
২) কাউকে বসাও তুমি সিংহাসনে, কেহ কেন্দে বেড়ায় দ'টো অন্ন বিনে ।
কেহ দারুন শোকে কান্দে নিশি দিনে, বুকে নিদারুন শোকের জ্বালা ।।
৩) কেহ কান্দে তব চরন পাব বলে , সর্বত্যাগী হয়ে থাকে বৃক্ষমুলে।
কেহ কান্দে কলে , পড়িলে অকুলে, পেতে তব চরন ধূলো ।।
৪) শ্রীহরি গোপাল রুপে অবতার, মৃত দেহে প্রান দিলে অলকারে ।
বিনা চাউলে অন্ন রাঁধিলে, এবার দিয়ে তব চরণ ধুলো ।।
৫) রসিক বলে সত্য গোপাল অবতার , তবু পোড়া ভাগ্যে কিছু নাই আমার ।
বগা নিবাসী শিবানন্দ এবার, আনন্দে বিলায় হরিনামের মালা ।।
১২ নং গান, তাল-
আমার প্রানের গোপাল বিনে বল , কেমনে রই ঘরে ।
কোন শান্তি নেই মোর অন্তরে ।। (২)
১) গোপাল আমার পরানের পরান, বিনে সেই ধন ,
কেমনে রয় জীবন, বুঝি হবে মরণ, পড়ে দুঃখ সাগরে ।
হাইহুতাশ প্রাণ যাবে রে - পড়ে এই অশান্তি সাগরে ।।(২)
২) গোপাল বিনে সকল অন্ধকার, যথা যাই তথাকার,
দেশ-বিদেশে একাকার, কোন শান্তি নাই আমার, কে শান্তি দিবে আমারে ।
বিপদের বান্ধব গোপাল রে, ফেলে গেল এ ঘোর আঁধারে।।
৩) আপন কর্ম দোষে গোপাল বুঝি বাম , মুখে নাই হরিনাম ,
তাইতে এই পরিনাম, নিকটে কাল শমন বাঁধাতে চায় মোরে।
এমন বান্ধব আর কে আছে রে আমায় কালের হাতে রক্ষা করে ।।
৪) কতজনে কত কথা কয়, কছুতে না প্রাণ জুড়ায় , দেশে যে
অমঙ্গল হয়, বিনে সে মঙ্গলময় শান্তি রয় যার চরন ধরে ।
রসিক বলে এই বিপদের আমার গোপালচাঁদ রাখতে পারে ।।
১৩ নং গান, তাল - কাশ্মিরী, রাগ - বেহাগ
আমার হরিচাঁদের প্রেমের নায়,
গোপাল চাঁদের প্রেমের নায়, কে যাবি আয়রে ত্বরায়।।
১) আজ না হয় কাল যাবি বলে দিন তো চলে যায়।
ওরে বন্ধ হলে পারের নৌকা ঠেকবি বিষম দায়, শেষে করবি রে হায় হায় রে।।
২) আপনি হরি দয়া করি, পারের তরী বায়।
যত দুঃখী তাপী, ধনী মানি পার করে এক নায়, সবে প্রেম বাজারে যায় রে।।
৩) দলে দলে হরি বলে, পার হইয়ে যায় ।
ওরে ওড়াকান্দি অবতীর্ণ জীবের পারের দায়, হরি এলেন এ ধরায় রে।।
৪) কূল ছাড়িয়ে ওঠে যদি, হরি প্রেমের নায়।
ওরে বোবায় বলে বল হরি বল, অন্ধে নয়ন পায়, অন্ধে নয়ন মেলে চায় রে।।
৫) দয়াল গোপালচাঁদ কয়, আয় সবে আয়, সময় বয়ে যায়।
রসিকের আর হলো নারে ভুলেছে মায়ায়, সে তো পারের যোগ্য নয় রে।।
১৪ নং গান, তাল - কাহার্বা, রাগ - বেহাগ
ও সখীরে ধন্য ধন্য সাধু রামচরনে ।
কোলে পেয়ে গোপাল কাঞ্চন (ও সখীরে)।
১) ধন্য কালীতারা সতী ,শ্রীরামচরন পেয়ে পতি, কোলে পেয়ে গোপাল রতন।
ধন্য ধন্য জগৎ জীবে ,যে ধন পায় না ভেবে ব্রম্মা শিবে, গোপাল বেশে হরি আগমন ।।
২) কম্ব মুনি অতিথি হইয়ে, প্রবেশ করে নন্দালয়, অন্ন খেল নন্দের নন্দন ।
তখন মুনি ক্রোধভরে, কত কটু বলে গোপালেরে, ধ্যানে জানলে গোপাল কোন জন ।।
৩) কি কব তার রূপের কথ, সতী ছাড়ে পতিব্রতা, দেখলে পারে সে চাঁদবদন ।
কোলের ছেলে ঘুমে ফেলে, সব কাঁদে বাবা গোপাল বলে, নয়ন জলে ভেসে যায় বয়ান ।।
৪) কে কে দেখবি ছুটে আয়, দরশনের সময় যায়, এমন দয়াল আর হয় নাই কখন ও ।
বিনা চাউলে ভাত রাঁধিল, কত মরা মানুষ বাঁচাইল দর্শন মাত্র সফল জীবন ।।
৫) গোপাল চাঁদের অসীম লীলা, চাঁদের সনে চাঁদের খেলা, আপনি যার অঙ্গে মিলন ও ।
রসিকের এমনি কপাল, চেয়ে দেখল না সে হরি গোপাল মায়াতে অন্ধ দু'নয়ন।।
১৫ নং গান, তাল - কহার্বা, রাগ - বেহাগ
দয়াল গোপালচাঁদের নামের গুনে, কত মরা গাছে ফল ধরতেছে ।
কত সন্তানহীনা সন্তান পেয়ে, প্রেমানন্দে ভাসিতেছে ।।
১) দীন - দৈন্য দুঃখী জনে, প্রাণ দিতে চায় অন্ন বিনে ।
দয়াল গোপালচাঁদের নামের গুনে, সকল দুঃখ অমনি ঘুচে ।।
২) প্রসন্ন সূতারের নরী, ওলাউঠায় গেল মরি ।
ও সেই মরা দেহে বলে হরি, বিনা চাউলে ভাত রেধেছে ।।
৩) এক মুখে গুণ বলব কত, অনন্ত যার পায় না অন্ত ।
যার স্মরণে জগত ভরে, সর্বজীবে কাদিতেছে ।
আমি সর্বহারা ঘোর পাষণ্ড, আমার মত আর কে আছে ।।
১৬ নং গান, তাল- কাহার্বা, রাগ- বেহাগ।
এমন সোনার পুতলী এলো ভাই, আয় ভাই দেখে আসি ।
যাবত পাগল করে নিল , হবে সেই ব্রজের কাল শশী ।।
১) কে আনিল এমন রূপের ছবি , হারে দেখলে তোরা পাগল হবি শেষে জ্ঞান হারাবি ।
অজ্ঞান তম দূরে যাবে ঐ রূপের জ্যোতি হৃদয় পশি ।।
২) যার পদে তীর্থ অগণিত, হারে ব্রহ্মার বাঞ্ছা অবিরত, কাঞ্চন মা সেবিত ।
যার জন্যেতে পাগল হয়ে, হারে শিব হল শ্মশানবাসী।।
৩) বাক্য যেন কি মধুময় , নানা দেব শাস্ত্র যার মুখেতে রয়, তার তুলনা কোথায় ।
ভকত চকোর হইয়ে , সুধা পান করে দিবা নিশি ।
৪) যখন কান্দে হরি বলে ,(হারে) বুক ভেসে যায় নয়ন জলে, প্রেম রসে গলে ।
কখন প্রেমানন্দে হরিয়ে , কিবা মুখে মধুর হাসি ।।
৫) কুমুদ বলে বাহু তুলে, তোরা কে কে দেখবি আয় সকলে, সময় গেল চলে ।
রসিক রে তুই রলি ভুলে, হয়ে কুল কামিনীর দাসী ।।
১৭নং গান, তাল - কাহার্বা, রাগ - বেহাগ ।
দয়াল গোপাল চাঁদের মহিম অপার ।
ও তার কি দিব তুলনা, জাভাতে মিলে না, যে ধন চায় আপনি হয় ।।
১) ব্রজে হরি গোপাল বেশে, মাতাইল নব রসে গো ।
সেই ধন বুঝি এলো রে এবার, কত মাতাল পুরুষ নারী,
বৈষ্ণব কি ব্রহ্মচারী নাই কোনো জাতির বিচার ।।
২) কলির জীব উদ্ধারের জন্য, এবার হরি এলো হইয়ে দৈন্য গো ।
পূর্ব জন্মে ভক্তি ছিল যার -
এবার সে পেয়ে সে মানুষে, প্রেমানন্দে ভাসে, হাসে কাঁদে অনিবার ।।
৩) দেখলে পরে চন্দ্রাধরে, কত কোলের শিশু কাঁদে ফের গো ।
কে বুঝিবে নিগুঢ় ইহার -
তারা কেন যেন কাঁদে, হেরে গোপালচাঁদে, বয়ানে বয় অশ্রুধারা ।।
৪) গেলেন প্রভু ত্রিপুরাতে, কত ভক্তবৃন্দ় লইয়ে সাথে গো।
করলেন প্রভু লীলা চমৎকার -
যত নারী আর পুরুষে পয়ে হরিষে, বাহ্যঞ্জান হারা সবার ।।
৫) রসিক বলে আর কি করি, এবার সকালে চিনিল হরি গো ।
এ সংসারে আমি দুরাচার -
ভবে আমি মুঢ় অন্ধ, যায় না মনের সখ, পেয়ে ভাগ্যে নাই আমার ।।
১৮ নং গান, তাল - কাহার্বা, রাগ - বেহাগ ।
শ্রীধাম ওড়াকান্দি হতে মানুষ এলোরে -
শ্রীধাম লক্ষীখালিতে ।
ও যার রূপে জগতে আলো হলো , নামে ধরা যায় মেতে ।।
১) গুনো পরান সেই নন্দের দুলাল , হবে সেই ব্রজের গোপাল রে,
হারে যার তুল্য নাই দিতে ।
কত মরা মানুষ বা চাইল এসে এই শেষ কলিতে ।।
২) করে করে করতালি , মুখে হরি হরি বলিরে ,
নাচে প্রেমানন্দেতে ।
ও সেই তালে তালে মহেশ মহিষ গরু নাচে হাম্বা রবেতে।।
৩) সাঙ্গ পাঙ্গ সঙ্গে করি , মুখে হরি হরি বলি রে ।
গেলেন সুতার বাড়িতে
তথায় বিনা চাউলে অন্ন হলো , হরি নামের ধুলাতে ।।
৪) অপার মহিমা রে যার , জলের কুম্ভীরে করে দেয় পার রে ,
ভাসে প্রেমানন্দেতে ।
হারে এক মুখে গুন যায় না বলা , বাঘ পালায় যার দোহাই তে ।।
৫) হরিচাঁদ গুরুচাঁদ মিশে , গোপাল চাঁদ রুপ হইল এসে রে ,
চাঁদ মিশল চাঁদেতে ।
হরি ঐশান্যের লীলা অন্তে গোপালচাঁদ শেষ লীলাতে ।।
৬) নমঃ বলতে পণ্ডিত ছিল, পতিত পাবন জন্ম নিলো রে ,
পতিত উদ্ধার করিতে ।
এ দিন রসিক নিজ কর্মদোষে হারাল চাঁদ হেলাতে ।।
দিন রসিকের বাসনা, সে রসে রসে না,
১৯ নং গান, তাল - বিষম একতাল, রাগ-খাম্বাজ।
কেবা জানে হরি মহিমা তোমারি,কে পারে তোমায় নিবারিতে ।
তোমারি তুলনা, তুমি নিরুপমা, তোমারি মহিমা তোমাতে ।।
১। অখিল সংসারে কত মত করে, রেখেছ হে প্রভু করুণা আঁধারে
রবি সুধাকরে, সর্ব জীবে করে, জীবনে জীবন রাখিতে ।।
২। খেচর বুচর, কিম্বা জলচর, রেখেছ হে প্রভু পুর্ণ চরাচর ।
পলকেতে গড়, পলকেতে হর, তুমি তমঃ হর নাশিতে ।।
৩ । মহাভাব আবেশে, হরি গোপাল বেশে, কি যেন কি ভাবে মানুষ আবাসে ।
এ দিন রসিকের বাসনা, সে রসে রসে না, কুরসে সে গিয়াছে মেতে ।।
২০নং গান, তাল - কাওলী, রাগ-সিন্ধু
হরি কাঙ্গাল বেশে, বঙ্গদেশে উদয় হইয়াছে।
হরি বেহাল বেশে শুভ্রাবাসে ,একাম্বর রূপ ধইরাছে ।।
১) চৌদ্দ ভুবন পতি হন যিনি, কলির জীবের জন্য হয়ে দৈন্য বেড়াচ্ছেন তিনি ,
তারে যে চিনে তার কিছু না, হয় বিনা মূল্যে খাটতেছে ।।
২) তিন যুগের পর জন্য কলিকাল, যোগ সাধনা কিছু চাই না শুধু হরি বল ।
যে জন হরি বলে হৃদয় খুলে, কোলে তুলে নাচতেছে ।।
৩) এমন সুদিন হবে না রে আর, বিনামূল্যে পার করে নেয় - না করে বিচার।
কলির জীবের বড় ভাগ্য ভালো যেচে যেচে নিতেছে ।।
৪) কতযুগ যুগান্তর ধ্যানে বসিয়া, যোগী ঋষি জীবন বসি গেল চলিয়া
তব পায় নাই যারে জীবের দ্বারে , আপনি হরি এসেছে ।।
৫। শ্রীহরিচাঁদরূপে অবতার, দয়াল গোপালচন্দ্র গুরু রূপে - নিলেন জীবের ভার ।
গোসাঞি অভয় বলে- মায়ায় ভুলে রসিক পড়িল না পিছে ।।
২১নং গান, তাল - বিষম একতলা , রাগ - ভৈরবী ।
কে বা জানে হরি মহিমা তোমারি-
গোপাল বেশে এসে হলে অবতার ।
১ । পতিতের বান্ধব পতিতেরি তরে ,
এসেছো হে প্রভু নমঃশূদ্র ঘরে।
কলি জিবগনের দুর্দশা হেরে ,
এলে বিনামূল্যে করতে ভব পার ।।
২ । পরশু অবতার হইলে যখন ,
চতুর অংশে প্রভু তুমি রাম লক্ষণ ।
তুমি গুণধাম , কৃষ্ণ বলরাম ,
গোলকে ভূলোকে তুমি মূলাধার ।।
৩ । নদীয়াতে তুমি গৌর নিতাই চাঁদ ,
ওড়াকান্দি ধামে শ্রী হরিগুরুচাঁদ ।
লক্ষীখালী ধাম, ত্রিনাথ অধিষ্ঠান ,
গোপাল চাঁদ রূপে তুমি হরিহর ।।
৪। অসীম অনন্ত -অন্ত কে বা পায়,
যে ভাবে, সবে তোমায় পায় ।
তোমারি আশায়ে, ভব নিরাশ্রয়,
সোনার কাশী ত্যাজ্য শ্মশানেতে ঘর ।।
৫ । গোকুলেতে তুমি যশোদার কোলে ,
বাৎসল্য ভাবেতে নবনী খাইলে ।
এবে ননি খেলে কালী মায়ের কোলে ,
কি সাধ্য চিনি বে-রসিক দুরাচার ।।
২২ নং গান, তাল - কাহার্বা , রাগ - বেহাগ।
কি কব ভাই গোপালের কথা ।
ও যার রূপের নাইকো তুলনা ,
গুনের নাই আর সীমানা , অসীম জগৎ পিতা ।।
১ । রূপ দেখে কেউ বিভোর হয়ে , পূর্ব স্মৃতি সব ভুলিয়ে গো ।
সদয় কাঁদে গোপালচাঁদ বলে বুক ভাসে নয়ন জলে, বুকে যেন কি ব্যথা ।।
২ । এই মানুষ যে দেশে ছিল, সে দেশের কেউ কি আছে বলে গো ।
অনুমান হয় কেহ নাই জেতা , ও তার ভাবে বোঝা গিয়েছে ।
এ দেশে তাই হতেছে , খেয়েছে রূপের মাথা ।।
৩ । এক মুখে গুণ বলব কত, যার গুণ গাহে সাদা ব্রহ্মসূত গো, রবিসুত মানে যার কথা ।
সবে মানে সেই গোপাল রসিকের নাই কপালে গেল না মনের ব্যথা ।।
৪ । দেখা মাত্র মন প্রান হরে, মানুষ এমনি করে পাগল করে গো ।
যখন কাঁদে মহাভাবে, কাঁদে সর্বজীবে, কাঁদে দেবের দেবতা ।।
২৩ নং গান, তাল - কাহার্বা , রাগ - বেহাগ
হরি আমি কোথায় যাব ।
আমার মনের আগুন দ্বিগুণ জ্বলে, কোথায় গিয়ে প্রাণ জুড়াবো।।
১ । আমি যারে চাই ভালো বাসিতে, সে চায়না মোর মুখ দেখিতে দয়াল রে ।
বুঝি কেউ নাই আমার এ জগতে, এ-দুঃখ আর কারে কব ।।
২ । ভাবে আমার মত কেউ নাই দুঃখী, কোথায় গিয়ে হব সুখী দয়াল রে ।
আমি নিজে কর্ম দোশে ভুগী, এ সংসারে কার দোষ দিব।।
৩ । আমার সব গিয়াছে স্বভাব দোষে, প্রেম ভক্তি ধন থাকবে কিস দয়াল রে ।
আমি কল্পতরু মূলে বসে, আমার মন চায় যত কুভাব ।।
৪ । দয়াল গোপাল চাঁদ ভাবিলে মনে, দুঃখ নাই কোন দিনে দয়াল রে ।
এ দিন রসিকের তা হবে কেনে, চিনলে না পারের বান্ধব।।
২৪ নং গান, তাল - কাহার্বা, রাগ - বেহাগ ।
কেন আমায় ভালবেসেছিলি ।
দেখা দিয়ে লুকাইয়া আমায় পাগল করিলি রে ।।
১। ও দরদী গো - এত যদি মনে ছিল আগে না বলিলি, কেন বা ফাঁকি দিলি ।
আমি এমন কি করেছি রে তোর তাইতে এই করিলি রে ।।
২ । ও দরদী গো - তোরে ভুলতে না পারি আমার পরান পুতলী, কেন বা চোখের কাছে এলি ।
আমার যা কিছু ছিল এ দেহে - সকল কেড়ে নিলি রে ।।
৩ । ও দরদী গো - আমার দিবা নিশি দহে অঙ্গ হয়ে গেল কালি, এ যে কি আগুন জ্বালালি ।
আমার আর কিছু লাগে না ভালো , মরমে মরিলি রে ।।
৪ । ও দরদী গো - আমি শোকে দুখে ছিলেন জ্বরা
তুই তো সব ঘুচালি , যে দিন ভালোবাসা দিলি ।
তুই যে কত গুণের দয়াল আমার , কেন বা নির্দয় হলি রে ।।
৫ । ও দরদী গো -এ দিন রসিক বলে দিন আর দিন -
সব যেতেছে চলি , ক্রমে হতেছে নির্বলী ।
আমি আর কি দেখা পাব না তোর গোপাল গুণমণি রে।।
২৫ নং গান, তাল - কাহার্বা, রাগ - বেহাগ ।
আমার মন তুই কেন বুঝনারে, গোপাল রূপ যার থাকেরে মনে ।
ও তার ভয় কি আছে রনে বনে, সলিলে কি বা আগুনে ।।
১ । দিবানিশি গোপাল চিন্তা , মানেনা আর কোন পন্থা, ঐ রূপ দেখে দু নয়নে ।
তারা জানেনা আর কৃষ্ণ বিষ্ণু , ব্রম্মা আদি পঞ্চাননে ।।
২ । বাওয়ালিয়া যায় বাওয়ালে , হুংকার ছাড়ে গোপাল বলে, বাঘ পালায়ে সেই ধ্বনি শুনে ।
দেখলেম গোপাল ভক্ত এমনি শক্ত নাও ডুবে না ঝড় তুফানে ।।
৩ । ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর হলে , কাঁদে যদি গোপাল বলে, সকল মিলে সেই খানে ।
সে যে জগৎগুরু কল্পতরু, এমন আর কভু দেখিনে ।।
৪ । দেখলে পারে চন্দ্র বদন , ক্ষুধা-তৃষ্ণা হয় না কখন, মত্ত হয় প্রেম সুধা পানে ।
দেখলে রূপের কিরণ করুন নয়ন , প্রেম বারি বয় নয়ন কোনে ।।
৫।গোসাঞি পুলিন রাজেন , জগবন্ধু পেয়ে গোপাল কৃপা সিন্ধু, প্রাণ সঁপিল ঐ চরনে
সাধু সখিচরণ পেল চরণ , রসিকের তা হবেকেনে ।।
২৬ নং গান,তাল - কাহার্ব , রাগ - বেহাগ ।
কেউ যদি মোর বান্ধব রে থাকো ,
প্রাণের গোপাল এনে দাখাও মোরে ।
আমার এ দেহে প্রাণ থাকতে(২) দেখ তোমরা চেষ্টা করে ।।
১ । দুরে থাকে করব দর্শন , স্পর্শ করতে চাইনে কখন, আমার অপবিত্র দেহ ধরে ।
দেখ রাঙ্গা চরণ জন্মের মতন , সকল জ্বালা যাবে দূরে ।।
২ । অন্তরঙ্গ ভক্ত যারা , গোপালের ভাব জেনে তারা, বেঁধে রাখল হৃদমন্দিরে ।
তার স্বরূপ রূপে নয়ন দিয়ে , ডুবেছে ওই রুপসাগরে ।।
৩ । অহরহ অন্তর্দাহ , এ জ্বালা জুড়াতে কেহ, নাহি বুঝি মোর এ সংসারে ।
আমি বুঝিতে না পারি আমার কেন যেন পরান পোড়ে ।।
৪ । কাছে আমি ছিলেম বটে সে ভাব তো বুঝি নাই মোটে, ঝলক দিয়ে গেল সরে ।
আমার হৃদয় আলো বন্ধ হল , ঘুরে মরি অন্ধকারে ।।
৫ । গোপাল ভক্ত আছে যারা , দিলে দিতে পারো তোমরা, সে যে ভক্তের হৃদয় বিরাজ করে ।
তোমরা পতিত পাবন জানি আমি, বাদ দিওনা রসিকে রে ।।
২৭ নং গান, তাল - কাহার্বা রাগ - বেহাগ ।
আমার মন - মাঝি তুই কেমন ধারা নাইয়া ।
এমন সাধের দেহতরী দেখলি না বাইয়া রে ।।
১ । ও মনমাঝি রে - তোরে গুরু দিল মানব তরী করুনা করিয়া,
মনে দেখলি না ভাবিয়া ।
কামিনী বরফ লাগাইয়া, নাও ফেলিলি ভাঙ্গিয়া ।।
২ । ও মনমাঝি রে - তোর গুরু দিল ছয়জন দাড়ি
তোর সঙ্গী কোরিয়া একা পারবি নারে ভাইয়া।
তোর মাধুর্য রূপ হাইলের বৈঠা,ফেলিলি ভাঙ্গিয়া রে ।।
৩ । ও মন মাঝি রে - সজন মাঝি যারা কত সাবধান হইয়া,
এ ভবে বেড়াচ্ছে বাহিয়া ।
পার জলে পরে না হরিনামের বাদাম দিয়া রে ।।
৪ । ও মন মাঝি রে - ও তোর কি বা সাধ্য আছে মাঝি
নাও থুইয়া পালাইয়া, সারা জনম ভরে বাইয়া ।
তুই যে মহাজনের দেনা হলি, দিবি কি ছাড়িয়া রে ।।
৫ । ও মনমাঝি রে - এ দিন রসিক বলে গোপালচাঁদকে-
কর সাধের নাইয়া, মনোপ্রান তাহারে দিয়া ।
অনায়াসে উঠবে পাড়ি, কাজ নাই তরী বাইয়া রে ।।
২৮ নং গান, তাল - কাহার্বা রাগ - বেহাগ।
যার জন্যতে সকল তে জিয়া রে
একা রই বিদেশে ।
১) সে -ও গেল আমায় খেলে রে - না জানি কোন দেশে ।
আমার এমন বান্ধব আর কেহ নাই ,
আমি দাঁড়াবো কার পাশে রে।।
২) শিশুকালে মায়ের কোলে রে - পিতার আবাসে ।
আমার সে সুখের দিন গেল চলে ,
ভাগ্যে এই কি ছিল অবশেষে রে ।।
৩) জাত - কুল - মান সব গিয়াছে রে - যাহার পরশে ।
আমায় সে - ও যদি না দেয় দেখা
ভাবে বেঁচে রই কার আশে রে ।।
৪) রসিক বলে এমনি ভাবে রে - কেমনে রই বিদেশে
আমার যায় যেন প্রাণ হরি বলে আমার - গোপাল চাঁদের দেশে রে ।।
২৯ নং গান, তাল - কাহার্বা , রাগ - বেহাগ ।
আর কবে জানিব গুরু, ডাকতে তোমায় পরান খুলে ।
মন প্রাণ সঁপে দিয়ে , ভাসিব দুই নয়ন জলে ।।
১ । কবে মনপ্রাণ বিশুদ্ধ হবে -দয়াল রে, তব প্রেম ভিখারী হইয়ে কেঁদে বাড়াবে ।
তব চিন্তা - চন্দন গায় মাখাবে আনন্দে, নাচবে রে দুই বাহু তুলে ।।
২ । কবে আমার, আসবে সুমতি রে - ও দয়াল রে - তব শ্রীচরণে আমার হইবে আত্তি ।
হবে সুখ - দুঃখে সমান স্ফূর্তি, অজ্ঞান তম আমায় যাবে ভুলে ।।
৩। রূপ দেখিয়ে সাধু রাইচরণ - ও দয়াল রে - মন প্রাণ দিয়ে করল আত্ম সমর্পণ ।
সাদায় কেঁদে বেড়ায় পেয়ে চরণ, ঐ রুপ আকা আছে হৃদকমলে ।।
৪ । রসিক বলে আমি যে অন্ধ-ও দয়াল রে- কোন গুণেতে হবে আমার হেন সৌভাগ্য ।
আমি এলে গোপালচাঁদের বাক্য, হায়রে আমার এই দশাঘটল কপালে ।।
৩০ নং গান, তাল - কাওয়ালী, রাগ - বাগেশ্রী ।
আর কি পাবরে আমার - গোপাল দরশণ ।
আমি দেখতে যদি পেতেম তারে জোড়াতো জীবন ।।
১। আমি গোপাল হারা কপাল পোড়া -
ঘুরে বেড়াই সঙ্গ ছাড়া ভাইরে ।
রবো আর কত দিন ব্যথিত হারা নাই বুঝি মরন ।।
২। আমায় ছাড়ল মাতা ছাড়ল পিতা -
ছাড়ল আমায় বন্ধু ভ্রাতা ভাইরে
আমি কারে কব দুঃখের কথা, কেউ নাই আত্মজন ।।
৩। আমি কোনো কাজ করি নাই ভালো -
তাইতে বান্ধব আমায় ছেড়ে গেল ভাইরে ।
এখন গোপাল শূন্য দেহ হল , বিফল জীবন ।।
৪। আমি মরিলে বাচাইয়া লবে,-
আমার এখন বান্দব কেউ নাই ভাবে ভাইরে ।
আমার সব অপরাধ মুছে দেবে কে আছে এমন ।।
৫। আমি কিসে করি জীবন রক্ষা,-
তোমরা দেও আমারে গোপাল ভিক্ষা ভাইরে ।
এ দিন রসিকের হল না দেখা গোপালের চরণ ।।
৩১নং গান, তাল - কাশ্মিরী, রাগ - সিন্ধু ।
আমি দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াই ঠিক-ঠিকানা নাই ।
আমি হায় হুতাশ বাতিলের মত ছাড়ি কত দুঃখের হাই ।।
১। আমি যাহারি জন্য - সে কি আমায় জনম ভরেভাবে অন্য।
আমি সম্বল শূন্য দিন দৈন্য, কোথায় গিয়ে প্রাণ জোরাই ।।
২। আমি হলেম ব্যথিত হারা, একা একা ঘুরে বেড়াই সঙ্গ ছাড়া ।
হলেম ভাই ভগ্নি ছাড়া, কপাল পোড়ার নাই রে ঠাঁই ।।
৩। দিনের দিন মোর সকল গেল, এ ভাবে মোর আসা - যাওয়া সার হইল।
ওই যে তলব চিঠি দেখা দিল, কোন দিন যেন চলে যায় ।।
৪। রসিক বলে গোপাল চাঁদ আমার, দয়া করে তুমি আমায় নিয়ে যাও ওপার ।
তুমি আমার নায় হইও কর্ণধার, যেন যুগল চরণ পাই ।।
৩২ নং গান, তাল - কাহার্বা , রাগ - বেহাগ ।
হারে ও আমার ভাঙ্গা নায়ের মাঝি , কোথায় এসো তুমি আমার নায়ে
নইলে তরী আর বাচে না বুঝি।
আমার অচল তরী বেণীতে , ভবে কেউ হলো না রাজী ।।
১ ।নাও মারিয়ে জুনিয়ায়, খোচ পড়িলসারা নায়, ধুয়ে গেল আত্মরস গাব কালি ।
মায়া জলে নষ্ট হল প্রেম- ভক্তি গুণ কাছি -
আমায় জানে প্রাণে সারা করে পাগল হয় মন মাঝি ।।
২ । ভাসলেম অকুল সাগরে , দিকবিদিক নাই অন্ধকারে, কাল আসিল মেঘ রুপেতে সাজি ।
চতুর্দিকে কালের গর্জন আর বাঁচলেন না বুঝি -
দারুন ভয় পেয়ে মোর সব দিয়াছে যা ছিল মোর পুঁজি ।।
৩ । এমন বিপদের কালের সব গেল আমায় ফেলে, পার্ক জলে পড়িয়ে ঘুরিতেছি।
জলে নৌকা ডুবু ডুবু পারি না জল সেচি -
আমার হাই হুতাশে প্রাণ বাঁচে না কোথায় রে গুরুজী ।।
৪ । পতিত হতে পতিত আমি , পতীতের বন্ধু তুমি, সেই বলেতো পাড়ি ধরিয়াছি।
যা ইচ্ছা হয় করতে পারো গোপাল চাঁদ বাবাজি
এ দিন রসিক বলে অন্তিম কালে বাবা তুমি হইও রাজী ।।
৩৩ নং গান, তাল - কাহার্বা ,রাগ - বেহাগ ।
পেড়া প্রাণ জুড়াবে কিসে আমি যার জন্যতো পাগল হলেন
তারে কই পেলেন এদেশে।
যে দিন নয়নে দেখেছি তারে সুখি ,-
সেই হতে হলেম বিদেশে।।
১। বলা যায় না লোক সমাজে, আমার কেমন করে হৃদয় মাঝে ,
আমার মন লাগে না কোন কাজে জ্বালা জুরায়না বাতাসে ।
আমার মনের আগুন দ্বিগুণ জলে সখী,-
প্রাণ বুঝি যাবে হুতাশে ।।
২। ব্রহ্মানলে কিবা জ্বলে, শীতল হয় তা শীতল জলে ,
এ যে কি আগুন দিয়েছে জ্বেলে সহিতে কি পারে মানুষে।
আমার দিবা-নিশি অন্তর জ্বলে সখী,- হদিয়া নিতেছে বিষে ।।
৩। আমার ছিল যত পূজাব্রত ওই পদে সমর্পিত
করেছি বাকি যত, নিয়া যাক আপনি এসে।
আমি মানুষ দেখে কত শত সখী,- সে মানুষ নাই এ মানুষে।।
৪। দেখতে পেলেন না ফিরে দুঃখ আর কব কারে,
কইলেও কেউ বোঝে নারে, কেমনে রব এ দেশে।
আমার এই দুর্দশা দেখে সখী,- সবে পালায়ে গেলো তব সে ।।
৫। পেলেম না আর গোপাল চাঁদে, যার জন্যে মোর পরান কাঁদে,
রাখতে যদি পারতাম বেন্ধে, যেতেম না বিদেশে।
সখীচরণ বলে ভ্রান্ত রসিক রে তুই, সে মানুষ আছে স্বদেশে।।
৩৪ নং গান, তাল-কাহার্ব্বা
কোথায় যাবরে, যাব রে আমার গোপাল চাঁদের তালাসে।
১) দেখা দিয়ে লুকাইলো গোপাল গুণমণি।
আর কি দেখা পাব না তার চরণ দুখানি যরে।।
২) যেদিন দেখেছি আমি, ঐরূপ নয়নে।
মনো প্রানো নিয়ে গেল, নাই বুঝি তার মনে রে।।
৩) জনম অপরাধী আমি, সে কি তা জানে না।
জেনে কেন ভালোবেসে ছিল কাল সোনারে।।
৪) বল তোমরা নগরবাসী, বল একবার শুনি।
কোন বা পথে গেল রে আমার গোপাল গুনো মনি রে ।।
৫) রসিক বলে জনম ভরে, কাজ করি নাই ভাল ।
সেই দোষে মোর গুণমণি, ফাঁকি দিয়ে গেল রে।।
৩৫নং গান, তাল- কাহার্ব্বা, রাগ- বেহাগ
দুঃখে দুঃখে জনম গেল আর কি সুখ পাবো, এভাবে কতদিন রব।
হায়রে গোপাল বান্ধব ।
১) সুখে ছিলাম মায়েরি কোলে, সেদিন মোর গিয়াছে চলে তাই এত দুঃখ কপালে।
হলেন পিতৃহারা কর্মদোষে, আমার সব জয়াছে কুবাতাসে, নাই আমার পূর্বের সে ভাব।।
২) ছিলেম আমি যাহারি আশ্রয়, সে যদি আমায় ছেড়ে যায় আর আমি দাঁড়াবো কথায় ।
মরন আমার বান্ধব হত যদি এখন আমায় নিয়ে যেত, ভবের জ্বালা জুরাত সব ।।
৩) পরান শূন্য দেহ যে আমার, হারিয়েছি যেন সবাকার, এদেহে কিছু নাই আমার ।
লয়ে পঞ্চভূতের বাসা, মিছে কেবল হবে আসা, হারায় পরানবল্লব।।
৪) ব্যাথার ব্যাথিত ভবে কেহ নাই, এ ব্যথা কারে বা জানাই, ব্যাথিত কোথায় গিয়ে পাই ।
ফাঁকি দিয়ে গেল সরে, আমি ফিরিয়ে না দেখলেম তারে এ ব্যথা মোর কিসে জড়াব।।
৫) কত জন্মের অপরাধ ছিল, তাইতে মোর এই দশা হল বান্ধব আমার কোথায় লুকালো।
রসিক বলে গোপাল আমার, আমায় নিয়ে যাও হে ওপার কেউ নাই আমার পারের বান্ধব।।
৩৬নং গান, তাল- কাওয়ালী, রাগ-আসোয়ারী
এই কি ছিল রে গোপাল তোমারি মনে।
আমায় দুঃখের বোঝা মাথায় দিয়ে লুকালি কেনে।।
১) আমায় দিয়ে কত ভালোবাসা, আমার না পুরিতে মনের আশা (হায়রে)
তুমি ভেঙ্গে দিলে আশার বাসা, ব্যথিত পরাণে।।
২) আমি ছিলাম কত সুখে দুঃখে, সব ভুলেছি চাঁদ মুখ দেখে( হায়রে)
এখন তোমার মতো কার মুখ দেখে, বাঁচব পরানে।
৩) আমার চিন্তানল হইল প্রবল, দিনে দিনে হলেম দুর্বল (হায়রে)
গোপাল তুমি বিনে কেউ নাই সম্বল, দেখবে নয়নে।।
৪) তোমার ভক্ত কাঁদে দলে দলে, তুমি কাঁদতে কত ভক্তের কোলে (হায়রে)
বুঝি সে সব কথা গেছো ভুলে, পড়ে কি মনে ।
৫) এদিন রসিক বলে কোথায় গোপাল, আমার ভেঙ্গে গেছে ভাঙ্গা কপাল (হায়রে)
আমার এই বুঝি কর্মের ফল বিধির বিধানে।
৩৭ নং গান, তাল-কাহার্ব্বা, রাগ-বেহাগ।
আমার আমার মানব জনম গেল বিফলে, সাধের জনম গেলরে গোলমালে,
ভাইরে আর কি পাব পরান গোপালে।
আমি কত জন্মের অপরাধী রে, তাই কি হবে এই কপালে।
১) কথা কয়ে গেল বারুনীর শেষদিনে,
মন্দিরের পার্শ্বে বসি সজল নয়নে, কত কত কাতর পরানে ।
কাতরতা দেখে কত কঠিন পাষান গেল গলে।। ও ভাইরে
২) আগে যদি জানতাম আমি যাবি গুণমণি, জন্মের মত দেখে নিতাম চরণ দু'খানি, সঙ্গে কাঞ্চন জননী।
পেয়ে রতন হারা, হারা হলেম, ভাগ্যে আর কি সে ধন মিলে (ও ভাইরে)
৩) কুল নারি সারি সারি প্রেমানন্দ চিতে, চলে লক্ষীখালি ধামে গোপালচাঁদ দেখিতে ।
কত কাঁদিতে কাঁদিতে।
কোলের ছেলে ভুমে ফেলে, হবে কাদে বাবা বলে (ওভারে)
৪) বন্ধুবান্ধব জমি সকলি তো আছে, তবু পোড়া মনে কি যেন কি গেছে, ভবে জনম আমার মিছে।
আমার মন লাগে না কোন কাজে, আমি কি কই যেন ভুলে (ও ভাইরে)
৫) অন্তরঙ্গ ভক্তের কাছে গোপাল পড়লো ধরা-
পূর্ণচাঁদ আর অভয়চরণ, গোপাল প্রেমে ধরা, তাদের নয়নে বয় ধারা।
রসিক বলে পাই বা না পাই, যেন গোপাল না যাই ভুলে।।
৩৮ নং গান, তাল-কাহার্ব্বা রাগ-বেহাগ
আমি পাপ করেছি রাশি রাশি রে, তোমরা কেউ এসো না মোর কাছে।
গুরুর চরণ ভুলে গিয়ে, হারে আমার এই দশা ঘটেছে।
১) আমার বাতাস গায়ে লাগিলে ও তার প্রেমভক্তি সব যাবে চলে,
হারা হয় সমুলে।
তবে যায় তারে ফেলে, ফিরে কেহ চায়না পিছে ।।
২) পাপের আগুন জ্বালাইয়ে, আমি সেই আগুনে দগ্ধ হয়ে আছি অঙ্গার হয়ে।
এমন সোনার দেহখানি পুড়ে ছাই হয়ে গেয়াছে।।
৩) গুরুর সে ভাব নাই মোর মনে, ঐরুপ একদিন দেখিনা স্বপ্নে,
বেঁচে আছি কেনে।
দীন-হীন এই ধরাধামে গুরু বাঁচাইতেছে ।।
৪) রসিক বলে স্বভাবদোষে, আমি সব খয়ালেম অবশেষে, অসৎ সঙ্গে মিশে।
গোপালচাঁদের প্রেম বাতাসে মহাপাপ মুক্ত হতেছে।।
৩৯ নং গান, তাল-কাশ্মিরী রাগ-বাগেশ্রী
অতি সাবধানে উঠিওরে মন, সাধন ভজন মজার পথে।
হবেনা তোর কোন অভাব, ভক্তি রঞ্জন থাকলে সাথে।।
১) যেওরে মন সাবধান হয়ে, হরির নাম স্মরণ রাখিয়ে।
গুরুর পদে নয়ন দিয়ে, পারবি না আর পলক দিতে।।
২)চলো অনুরাগের ভবে, কাম ক্রোধ তোর যাবে হবে।
অজ্ঞান তম যাবে দুরে জ্ঞানময় রবির কিরণেতে ।।
৩) পথে আছে পঞ্চ কাঁটা, জাতি বিদ্যা রূপের ছটা।
লক্ষ রাখিস পথের কাঁটা আসছে সাধু তোরে নিতে।।
৪) পথে আছে মায়া ধারী, তোর মন করতে চলে যাবে চুরি।
খবরদার তুই যাসনে ফিরি চলে যাবি সোজা পথে ।।
৫) রসিক বলে শান্তি পাবি, যখন শান্তিপুরে জাবি।
গোপালচাঁদকে দেখতে পাবি, হরিচাঁদ প্রেমবাজারেতে।
৪০ নং গান, তাল-কাহার্ব্বা, রাগ-বেহাগ।
আমার মনে ভাবি ভাল হবো, আপন কর্ম দোষে হলেম মন্দ আমার স্বভাব দোষে,
এসে, ভাবের ঘর করেছে বন্ধ।।
১) ভালো-মন্দ জানিয়া সকল, বুঝে শুনে সুধা ত্যাযে খেয়েছি গরল,
গেল গুরুদত্ত অর্থ সকল বাধল মনে, মুখে, প্রানে দ্বন্দ্ব।।
২) ঘরে বাইরে না থাকলে ঐক্য, লক্ষীছাড়া হয়ে করে ধর্মের বিপক্ষ,
আমার মনে, মুখে ভাবনাই সখ্য তাইতে মদনা, চোরার কি আনন্দ।।
৩) গুরুর বাক্যে বিশ্বাস থাকিলে, হরি গুরুর ভিন্ন নয় বেদ শাস্ত্রে বলে,
ও তা ঘটল না মোর এই কপালে, দয়াল গুরুচাঁদ প্রতি হল সন্দ।।
৪) হরিচাদের যত ভক্তগণ নয়ন জলে বুক ভেসে যায় প্রেমেতে মগন,
আমার এ পোড়া মুখ দেখলে কখন, তাদের থাকে না সেই প্রেমানন্দ।।
৫) দয়াল গোপালচাঁদ তাই ডাকিয়া শুধায়, সেভাবে ভাবুক না হলে- সে ভাব পাওয়া দায়।।
এদিন রসিক বলে দিন দয়াময়, আমি আর কতকাল রব অন্ধ ।।
৪১ নং গান, তাল-কাহার্ব্বা, রাগ-বেহাগ।
আমার হারানো ধন আর কি পাবো ফিরে।
কত কষ্টে পেয়েছিলাম, গোপাল গুনমনি রে।।
ও বান্ধব রে, আমার বিপদ দেখে মনের দুঃখে,
কত ডেকেছিল আর কত যে কেঁদিল।
ফিরিয়ানা দেখলাম ওই রূপ, তাইতে এই হইলো রে।।
২) ও বান্ধব রে, যখন চন্দ্র মুখে ডাকতো আমায়,
প্রান জুড়াতাম শুনে কত আনন্দ পরানে।
আমার সকল দুঃখ দুরে যেতে চাঁদ মুখের বাণী শুনে রে-।
৩) ও বান্ধব রে, যখন প্রেম সুরে গাইতো গান পাষাণ গলিত, জলে উজান বাহিত ।
পশুপক্ষী কাঁদে সবই কাদে কোলের শিশু রে।।
৪) ও বান্ধব রে, এদিন রসিক বলে সাধনের ধন্য হারাই অযতনে ধনী ছিলাম রে যে ধনে,
আমি আর কোন ধন চাইনা গোপালচাঁদের চরণ বিনে।।
৪২ নং গান, তাল-কাহার্ব্বা, রাগ-বেহাগ।
তোরা তো ভাই বলিস মন্দ, কেমনে রই গৃহবাসে।
আমার মন মতি ভালো নয় মোটে তাইতে ঘুরি দেশ বিদেশে।।
১) কি যেন কি করলো মোরে, কেন যেন পরান পোড়ে, জুড়ায় না আর এ বাতাসে।
আমি কি করিতে কি করিতেছি নাই আমার দিশে বেদিশা।।
২) কোথায় গিয়ে পরান জুড়াই কোথাও যে শান্তি না পাই।
কোথায় বা যাই তার তালাসে।
শুনি প্রান জুড়ানো মানুষ আছে তারে তো পাইনা তালাসে।।
৩) যে অশান্তি আমার ঘরে তা তো তোরা জানিস না-রে ছয় জন আছে ঘরে বসে ।
আমার ছয়জনে ছয়য় দিক টানে, প্রাণ যায় আমার হা-হুতাশ।।
৪) এভাবে কেমনে বা ভাবে মোর জনম মিছে, জালল্ বিষয় বিষে।
এ দীন রসিক বলে জুড়াতো প্রাণ, পেলে গোপালচাঁদ উদ্দেশ্যে।।
৪৩নং গান, কাহার্ব্বা, রাগ- বেহাগ
আমার এ জীবনে ঘুচবে কি আর মন্দ মতি কুস্বভাব।
আমার মনে বড় বাঞ্ছা ছিল, প্রেমানন্দে সাধুসঙ্গ দিব।।
১) পশু-পক্ষী যত জীবগনে, সবে গুরুর আইনে বাঁধা, চলে আইন মেনে।
আমি মানুষ হয়ে আইন মানিনে, আর কার সনে তুলনা দিব ।।
২) মহাপাপী আমি দুরাচার, কত জন্ম জন্মান্তরে করছি অনাচার।
তাইতে গেল না মোর মনের বিকার, এ দুঃখে কোথায় গিয়ে প্রাণ জুড়াব।।
৩) এমন সুদিন হবে না রে আর, কোন যুগে হয় নাই এমন দয়াল অবতার।
তবু গেল না মোর মনের অন্ধকার (হায়রে) এমন দয়াল আর কি পাব।।
৪) যখন হরি কীর্তন মাঝে যাই, মুখে বলি হরি মন যায় অন্য ঠাঁই।
মধুর হরি নামে রুচি হয় নাই, এ দেহ কি দিয়ে শুচি করিব।।
৫) তোমরা আছো ভাবো হরি ভক্তগণ, সকলের চরণে আমার এই নিবেদন ।
আমি পাব কি সেই রাঙা চরন এ ভবে তোমরা পতীতের বান্ধব।।
৬) সাধু রাই চরণের মনের অভিলাষ, সবে মিলে গোপাল চাঁদের চরণে হই দাস।।
এদিন রসিকের হল সর্বনাশ, তোমরা সবে গোপালচাঁদ কে ভাব।
৪৪নং গান, তাল-কাহার্ব্বা, রাগ- বেহাগ
আমি দেখলাম ঘিরে এই ভবের, দুঃখির আর কে আছে ।
কর্মেতে থাকিলে দুঃখ, ঘৃণায় কেউ যায় না তার কাছে।।
১) দুঃখীর আর ভবে কেহ নাই (হায়রে) সদায় ছাড়ে দুঃখের হাই।
ছাড়ে দরদী ভাই, দিন-রাত কাটে হায় হুতাশে, দুঃখে দহিয়া নিতেছে।।
২) জনম গেল দুঃখে কেটে, (হায়রে) এ দুঃখের কি শেষ নেই মোটে ।
বলতে বুক যায় ফেটে, কে শুধায় এসে নিকটে, ব্যথিত হারার কাজ কি বেচে।।
৩) গোপাল চাঁদ তাই বলছে ডেকে, ও যার এ জগতে কেউ না থাকে।।
হরি তারে দেখে, রসিক নিজ কর্মে ভোগে, হরি বৈমুখ হয়ে আছে।
৪৫নং গান, তাল - কাহার্ব্বা, রাগ।
হায় রে ও অকুলের কান্ডারী, সকল বহর বেয়ে যায়, আমার এই ভাঙ্গা নায়ের কি করি ।
তোমার দয়াল নাম শুনিয়ে, আমি ধরেছিলাম পাড়ি।
১) কুল ছারিয়া মাঝে এসে তরি যায় কাম স্রোতেভেসে ভাটি পেয়ে টানে জন দাড়ি।
ভাটিয়া নায়ে পাল তুলিল মনো রে বেহুসারী ।
এখন মদন গঞ্জের ঘোলায় পড়ে বুঝি প্রাণে মরি ।।
২) পাপে তরী বোঝাই সারা, নাইকো তাতে ভক্তি-দড়া,
বিশ্বাসের গুন হয়ে গেল চুরি।
বন্ধু-বান্ধব ছিল যারা, কেউ দেখল না ফিরি।
আমার আশা নাই সে কুলের যেতে যদি প্রাণে মরি।
৩) মাধুর্য সুমতি ছয়জন, ত্যাজল আমায় জন্মের মতন,
কুমতি বসেছে হাল ধরি।
অজ্ঞান অন্ধ গলহ ধারে রহস্যের গুণ ভারী এসব দুষ্টগনে সুমতি দাও দয়াল হরি।
৪) হরিচাদের ভক্তে যারা, চাঁদের আলো হৃদয় পোড়া,
বান্দা আছে সূক্ষ প্রেমের ডুরী।
কোন ভয় করে না তারা সদায় বলে হরি।
ও সেই মহা ভাবের ঢেউ লাগিয়ে দোলায় সাধের তরী।
৫) দয়াল গোপালচাঁদ অকুলের নেয়ে অচল তরী নিচ্ছে বেয়ে আপনি হয়ে পারের কান্ডারী।
রসিক বলে এমনি নৌকায় আসবে কেনো হরি ।
আমি জনম ভরে অপবিত্র যদি নেয় দয়া করি।।
৪৬নং গান, তাল - কাহার্ব্বা, রাগ-বেহাগ।
হারেও এমন সুজন পাইয়া, পেয়ে যতন করি নাই, দুঃখ আর কারে জানাই খুলিয়া।
আমার প্রাণের ব্যথা কে বুঝিবে দরদিয়া-রে দরদি হইয়া।।
১) মনফুলে নয়ন-জলে, পুজলেম না তায় আপন বলে।
সেই দোষে যায় আমাকে ছাড়িয়া।
হৃদয়ের নিধি আমায় গেলা ফাকি দিয়া আগে যদি জানতাম আমি।
রাখিতাম বান্ধিয়া-রাখিতাম বান্ধিয়া ।।
২) কপাল মন্দ পাইতে বিধি, হয়ে আমার প্রতিবাদী, হৃদয় নিধি নিলো কারিয়া।
কপাল মন্দ থাকে যার কাজ কি রে বাচিয়া আমার এ জনম বৃথা গেল,
পাবো কি ফিরিয়া পাবো কি ফিরিয়া।।
৩) যার জন্য সরে গেল, তবু নারে দেওয়া হল, ভাবলেম না তায় ষোলআনা দিয়া।
পিতা-মাতা ত্যজল আমার কলঙ্ক দেখিয়া,
আমার একুল ওকুল দু'কুল গেল, ঞঞবেড়াই ভাসিয়া রে বেড়াই ভাসিয়া।।
৪) ঘুম থেকে তাকে দেখে প্রান কাদে মোর থেকে থেকে, রইতে নারি ধৈর্য ধরিয়া।
গোপালচাঁদ সেই মনের মানুষ দেখলাম না চাহিয়া,
এদিন রসিক বলে এই কপালে হবে কি লাগিয়া-হবে কি লাগিয়া।
৪৭নং গান, তাল-কাহার্ব্বা, রাগ-বেহাগ।
ও দরদী বিহনে জীর্ণ ধরিয়া, কেন রইলেম বাঁচিয়া জীবনে।
প্রভুর চরণ ছাড়া হয়ে মরি, বিচ্ছেদ আগুনে রে বিচ্ছেদ আগুনে।
১) যেমন নারীর গতি প্রান-পতি পুরুষের গতি গুরুপতি,
গুরু বই আর কে আছে ভুবনে।
বিপদের কান্ডারী হয়ে রাখে গুরুধনে গুরুধনে
এমন পরম দয়াল কাছে পেয়ে হারাই অযতনে হারাই অযতনে।।
২) মানব কুলে জন্ম নিয়ে, অমানুষের কাজ করিয়ে,
কত ব্যথা দিলাম গুরু ধনে- উচিত নয় এ মহাপাপীর এ মুখ দরশনে-
ভবে আমার মত কেউ হইও না গুরুর চরণ সাধন বিনে রে।
৩) আজি তাহার দয়ায় মাত্র, আমি নই তার দয়ার পাত্র
অপবিত্র রইলেন চিরদিনে, হৃদয় মাঝে রাখবো তারে, ছিল মনে মনে-
ও সেই ভাব ছাড়া হয়েছি আমি মরন হয় না কেনে।।
৪) গোপাল চাঁদ কে কবে পাবো তবে পরান জুরাইব
দেখবো ওই রুপ ভরিয়া নয়নে।
মুখের কথায় পায় না সে ধন বোঝেনা পরানে
এদিন রসিক বলে পাইবা না পাই থাকে যেন মনে রে।।
৪৮নং গান, তাল-কাশ্মিরী, রাগ-বেহাগ।
মন তোর দিন তো গেল বইয়ারে ত্ত তোর দিন তো গেল বইয়া
কি বলিয়া এসেছি মন, তারে বুঝাবি কি দিয়া।।
১) বাজিকরে তোরে পাইয়া, তার কর্ম সে যায় সারিয়া,
তুই তোর রলি সে দিকে চাইয়া সে গেল সরিয়া,
কিছু বলার সাধ্য নাই তোর মোহিত হইয়া-
ও তোর আসল মাল তোর নিয়া গেল চোখে ধুলি দিয়া।।
২) পিছের বেড়া নাই তোর মোটে, সামনের দুয়ার দিচ্ছ এটে,
মনিকোটার বেড়া কেটে চোর ঢুকলো আসিয়া।
সামনে সুন্দর করে বেড়াও কতনা রঙ দিয়া-
তোরে ছাড়বে তা আর রবি সুতে নীরবে বান্ধিয়া।।
৩) যারা ছিল সাথি সম্বল তারা তোরে পেয়ে ভোম্বল,
সব করিছে পয়মাল সুযোগ পাইয়া
নিজের মাল তুই নিজের হাতে দিয়েছো সাধিয়া-
তোর সারা জন্মের কামাই দিলি এককালে খোয়াইয়া।।
৪) মনে ভাব এই বুঝি সুখ, সামনে কতো আছে রে দুঃখ,
শেষে বলবি বিধি বেমুখ কষ্ট পাইয়া।
দুঃখের বোঝা আগে কিছু মাথায় লও বান্ধিয়া-
ও সেই কর্মগুণে সুখ পাবি তুই শেষকালে যাইয়া।।
৫) দয়াল গোপাল চাঁদের মধুর বাণী, হরি নাম লও দিন-রজনী
তবে পাবি প্রেমের খনি যাস না রে ভুলিয়া।
অনুপায়ের উপায় আমার গুরুচাঁদ আসিয়া -
যত দুঃখী তাপীয় পার করে নেয় রসিক রইল চাইয়া।।
৪৯নং গান, তাল -
হরি তোমার প্রেমের যোগ্য গুরুচাঁদ হলেন না আমি রে।
হরি তবু আমায় ভালবেসে, রাখতেছ যতন করে।।
১) মহা পাপী আমি ভন্ড, আমার মত নাই পাষণ্ড গো-
আমি আত্ম-গৌরব করে ফিরি, হরি দোষ দেই শুধু তোমারে।।
২) হরি তুমি করুণাময়, কত শান্তি দিলে আমায় গো-
আমি কামিনী-কাঞ্চন পেয়ে, ভুলে রলেম তোমারে।।
৩) মত্ত হয়ে বিষয় মদে, ভক্তি নাই হরি তোমার পদে গো-
আমি জয় জনেরই সঙ্গ ধরে, বন্দি পরছি মায়ার ডোরে ।।
৪) জনম ভরে করলেম মন্দ, কিসে গোপাল চন্দ্র গো-
আমার গেল না রে চিত্ত সন্দেহ, ডুবে মলেম অঞ্জানাধারে।।
৫) রসিক বলে করুনাময়, একবিন্দু প্রেম দাও আমায় গো-
তোমার নামে যেন অশ্রু ঝরে, হরি বরি প্রেম সুরে।।
৫০নং গান, কাহার্ব্বা, রাগ- বেহাগ
শ্রী হরির সাধন-ভজন, গোপালচাঁদ আমিতো জানি না।
তুমি নিজগুনে দয়াকরে পুরাও আমার মনের বাসনা।।
১) কি দিব নাই প্রেমভক্তি ধন, সব নিয়াছে দারুন দমন গো-।
আমি জানে প্রাণে হলেও সারা, ঘটল কী বিষম যন্ত্রনা ।।
২) নয়ন শুষ্ক মরুভূমি, আমার সকলি তো জানো তুমি গো--।
আমার কাছে মাত্র শূন্য দেহ, পোড়া প্রাণে তাহা বোঝেনা।।
৩) ভবে তুমি কাঙ্গালের দয়াল, লয়ে আমার দুখের কপাল গো--
আমি যার কাছে যাই, পাইনারে ঠাঁই, আমি কি ঠাই পাবনা।
৪) দয়াল গোপালচাঁদ রূপে অবতার, কলির জীব করিতে উদ্ধার গো--
হায়রে এমন দয়াল পেয়ে আমার, পাপ দেহের ভার গেল না ।।
৫) রসিক বলে হে গুরু ধন, কে আছে আর তোমার মতন গো--
তুমি যা ইচ্ছা তাই কর, প্রানান্তেও যেন ভুলে না।।
৫১নং গান, তাল-কাহার্ব্বা, রাগিনী- বেহাগ
তোমায় কেমনে চিনিবো গুরু আমি অধম দিন দুরাশায়।
আমার জ্ঞানের আলো বন্ধ করে, ঘুরে মরি আন্ধার কোঠায়।।
১) ছয় জন বাদী হলরে আমার, (হায়রে) গুরুদত্ত যে ধন ছিল, কিছু নাই তাহার।
আমার সর্বস্ব ধন ধরে নিয়ে গো, দিল এক মায়ার ঝুলি বেঁধে গলায়।।
২) ভক্তি শক্তি মোটে আমার নাই, (হায়রে) কোন গুণেতে পাব গুরু শ্রী চরণে ঠাই।
আমার চোখে নাই প্রেম বারি বিন্দু গো-- আমার সকল গেল বিষয়ের আশায়।।
৩) হরি গুরু ভিন্ন নয় রতি, দয়াল গুরুতে মোর হল না আর্তি ।
ভবে আমি অতি মুঢ় মতি গো--( হায়রে) গলে না এই কঠিন হৃদয় ।।
৪) মনে ছিল বড় অভিলাষ, (হায়রে) মন প্রাণ দিয়ে গুরুর পদে হব দাস।
আমি মজিয়া কামিনী-কাঞ্চনে গো-- সুখ পেয়ে পেয়ে ভুলেছি তোমায়।।
৫) রসিক বলে সাধের জনম যায় (হায়রে) মন প্রানো দিলেমনা গুরু গোপাল চাঁদের পায়।
গুরু আমায় দয়া করবে কেনে গো-- রলেম অপবিত্র নিরাশ্রয়।।
৫২নং গান, তাল-কাহার্ব্বা, রাগ-বেহাগ।
হরি যে খাটনি দিয়েছো আমায়, খেটে সাধের জনম গেল।
আমার হরি বলা হলো নারে, দিনে দিনে সব ফুরাল।।
দিয়াছ কুহকিনী সে জ্বালা দিন রজনী, খাটি সদা যে খাটুনি, তবু সে বাসে না ভালো।
আমি কার কাছে নালিশ করব, তোমা বৈ কে আছে।।
২) দিয়াছ সুখের সংসার, তাতে হয় অসুখ আমার, ঘটলো জয় রোগে বিকার, রোগে দেহ জারে নিল ।
আমার বিপদ দেখে মনের সুখে মদন কুম্ভীর টেনে নিল।।
৩) এইভাবে দিন কি যাবে, মিছে কেন এলেম ভবে, ডুবে সংসার গৌরবে, ঘটলরে জঞ্জাল।
আমার একুল ওকুল দু'কুল গেল, কোন কুলে ঠাইনা হল।।
৪) গোপালচাঁদ বলছে ডেকে, শোনরে অধম রসিক, পড়িল বিষম বিপাকে, নাই কোন সম্বল।
তুমি জগত তরাতে এলে, এ দাসের কী উপায় বল।।
৫৩নং গান, তাল-কাশ্মীরি (রাগিনী বেহাগ)
মন তুই ভাবছো কি আর বসে রে,
মন তুই ভাবছো কি আর বসে।
দিনে দিনে, দিন ফুরালো, অবশেষে পাবিনা দিশে।
১) যখন মায়ের উদরে ছিলি, তখন যারে পেয়েছিলি,
তারে এখন ভুলে গেলি- বেঁচে যদি কিসে ।
তুই ধরায় এসে কালের বসে হারাইলি দিশে।।
২) টাকা-কড়ি বিত্ত, প্রসার ভাবছো বুঝি সবই আমার,
চোখ বুঝে দেখ সব অন্ধকার, রয়েছ কোন দেশে।
তোর ভাই বন্ধু সব ত্যাজ্য করে, থাকবি নদীর কূলে পরবাসে।।
৩) পাবিরে খাটনির মজুরি, ভাঙ্গা কলস পাটের দড়ি,
আগে লবে মুখখান পুরি বন্ধুগণে এসে।
পাবি জন্মাবধি খাটনি খেটে ছেড়া তেনা অবশেষে।।
৪) রসিক বলে শোনো আমার মন, আমার আর বলিস না কখন,
ভজরে শ্রী গুরুর চরণ নীরবে বসে।
দয়াল গোপালচাঁদের চরণ ভুলে, প্রাণ হারাবি হায়-হুতাসে।।
৫৪নং গান, তাল- আদ্দা (রাগিনী বেহাগ)
গুরু আর কত পোড়াবে আমায় ত্রিতাপ আগুনে।
আমার পোড়ায় পোড়ায় জনম গেল, পোরা সহেনা রে আর পরানে।।
১) জ্বলে আগুন জুড়ায় না মোটে, বলিতে না পারি, আমার বক্ষ যায় ফেটে ।
আমি কেঁদে কেঁদে বেড়ায় মাঠে-ঘাটে, এই কি ছিল রে তোমার মনে।
২) কাঁচা হাঁড়ি আগুনে ফেলে, কি খেলা খেলিছ তুমি থেকে আড়ালে,
আমায় দয়া করে লওহে তুলে, বঞ্চিত করো না ঐ চরণে ।
৩) আমার মত পতিত ভবে নাই, তুমি গুরু পতিতপাবন চোখে দেখতে পাই।
আমার আশা ছিল তব গুন গাই, হ'ল না তা র'ল মনে।।
৪) রসিক বলে দিয়াছ পোড়া মনের মতো পুড়ে আমায় করে লও যারা ।
তবু হইনা যেন চরণ ছাড়া, এই নালিশ গোপাল চাঁদের চরণে।।
৫৫নং গান, তাল- , রাগ-রাগ।
ছেড়ে সব অন্য ভাবনা, শোনরে মনা মন মানুষের কর সাধনা।
মানুষের সু-বাতাসে, প্রেম-রসে দেহ গলে সোনা।।
১) তারে মন বিশ্বাস করে, প্রেম ডোরে বেন্ধে তারে, তা'রই হও না।
হলে শ্রীপদে দাস, করবে রে খাস্ দেখবি রূপের ছবিখানা ।।
২) হবে মানুষের আর্ত্তি একরতি, দিতে আর বাকি রেখ না ।
মন প্রাণ দিলে তারে, পাবি তারে, ঘুচবে ভব যন্ত্রণা।।
৩) হরি প্রেম রসে মত্ত, পেয়ে তত্ত্ব, যাবেরে অনিত্য ভাবনা।
থাকবি রে মন প্রেম বাজারে দোকান করে, করবি প্রেমের বেচা-কেনা ।।
৪) কিবা ডোর কৌপিন আটা, তিলক ফোঁটা, মিছে কেবল ভেক নিশানা ।
থাক অন্য তন্ত্র মন্ত্র, মূলমন্ত্র হরিনাম কর জপনা।।
৫) গোঁসাই কুমুদ বলে হরি বলে, গোপালচাঁদ মোর খেলে সোনা।
রসিকের রিপু বসে স্বভাবদোষে, পেয়ে সে মানুষ চিনল না।।
৫৬নং গান, তাল-কাহার্ব্বা, রাগ-বেহাগ।
মন তোরে গুরু দিল যে ধন করিয়া সযতন, কারে দিলি আপন ভাবিয়া।
মন তুই নিজের দিকে না চা'লি কি ছিলকি হলি, না পরিনাম চিন্তা করিয়া।
১) ছিলি যখন মায়ের কোলে ভেবেছো সব আপন বলে শুধু মায়ের কোলে থাকিয়া তুই যৌবন জোয়ারে দেহ
ছেড়ে আসলে এমন মায়ের কোল ছাড়িয়া।
২) ক্রমে পেলি নারী সঙ্গ, জাগালো দেহে কাম তরঙ্গ, গেল রে তোর ভাঙ্গিয়া।
তুই পিতৃ ধন হারাইলি কুকর্মে মিলি, জীর্ণ শীর্ণ হইয়া।।
৩) এখনো মন দেখ না ফিরি, গুরু হয় কি না হয় তোর কান্ডারী, যতন করে দেখো কাঁদিয়া।
সে যে পতীতের বান্ধব, থাকবে না তোর অভাব, ওই দেখ আয়ু রবি গেল চলিয়া।।
৪) রসিক বলে মন দুরাচার, গোপাল চাঁদ ভব কর্ণধার, সব নিতেছে পার করিয়া।
এমন সুযোগ পাইয়া, রইলি ঘুমাইয়া, শেষে অকুল হবি তুই কান্দিয়া।।
৫৭ নং গান, তাল-কাহার্বা, রাগ- বেহাল।
গুরু আমায় নিবে কি সেই প্রেম বাজারে।
আমার এই বাসনা ছিল মনে থাকবো তোমার চরন ধরে।।
১) কত বহর পেয়ে খুললেম তরী, নৌকায় নাই ভক্তি গুণ দড়ি, দয়াল রে...
এখন মুহার বাতাস বেয়ে মরি, জল ছান্দে না ভাঙ্গা দ্বারে।
২) ভাঙ্গা তরী বোঝাই ভারী, জল মানেনা তক্তার সাড়ি, দয়ালরে...
গুরু তুমি এসে হও কান্ডারি, নইলে তরী বাচে না রে।।
৩) ভাটিয়া গোন বেয়ে বেয়ে, প্রেমের জোয়ার গেল বয়ে, দয়াল রে...
সাধের বেলা গেল উজান বেয়ে, ঘিরল এসে অন্ধকার।।
৪) রসিক বলে পোড়া কপাল, সকল আসা হলো নিষ্ফল, দয়াল রে...
আমি কেমনে দেখব প্রাণের গোপাল, পরে রইলেম অন্ধকারে।।
৫৮নং গান, তাল-আদ্দা।
মনরে আমার বেহুসারী, এখনও তুই বলরে হরি।
১) আজ না হয় কাল হবে বলে, কাল কাটালি মায়ের কোলে
বন্দি হইলি আট কলে, বাস শমনের পুরী।।
২) কামিনী কুরসে মেতে, হারা হোলি সমূলেতে,
দোষ দিবি কার বিচারেতে, আইনে দন্ড হবি ভারি।।
৩) হলিরে মানুষের আকার, করলিরে পশুর ব্যবহার,
মানুষ হয়ে নাইরে বিচার, করে বেড়াও ছলচাতুরি।
৪) মন তুই একবার দেখ না ভাবি, দিনে দিনে তোর সব হারাবি,
পারের ঘাটে বসে কাঁদবি, পাবি না পারের কান্ডারী।
৫) শ্রীহরি গোপাল অবতারে, এলেন নর দেহ ধরে,
পেয়ে সাধন করলি নারে, এ দিন রসিক দুরাচারী।।
৫৯নং গান, তাল-আদ্দা।
যাওয়া হবেনা গোপালচাঁদ রূপ দরশনে।
ও তা হবে কেন, হল না তা কোন দিনে, আমার হলো না কোন দিনে।
১) বেঁধে মায়াজালে, সব গিয়াছে মায়ায় ভুলে, আগে জানি নাই এত দুঃখ এই কপালে।
আমি না চিনি গোপাল ধন, বৃথা, মোর এ জীবন,
কেন বা হয় না মরন, কাঞ্চন মাতা দাসী হলো যার চরণে।। (মরি হায় রে)
২) গোপাল রূপের ছবি, দেখতে যায় সব দেব-দেবী, অজ্ঞান তিমির নাশে, গোপাল দীপ্ত রবি।
ও তার প্রেম ও বন্যায় কুল ডুবায়, কুলিনে কূল না পায় হইয়ে নিরুপায়, পেয়ে গোপাল কুল কাঁদে আকুল পরানে।।
৩) গোপাল ভক্ত যারা, কত ডেকে গেল তারা, দিন থাকতে দিলেম না কোন সাড়া।
তারা চলি যায় সারি সারি, বলে হরি হরি, চাই ফিরি ফিরি, আমি ফিরি চাইলাম না অভিমানে।।
৪) রসিক বলে সবার ভাগ্যের আর তো সীমা নাই, স্বচক্ষে দেখল গোলকের গোঁসাই।
আমি সুকর্ম করি নাই, কোন গুনে দেখতে চাই, দেখার সাধ্য নাই। মরে রয়েছি মদনের পঞ্চবানে।।
৬০নং গান তাল-কাহার্বা। রাগ-বেহাগ।
কত দয়া করছো গুরুচাঁদ, তবু তোমায় বাসলেম না রে ভালো।
কু-ভাবনায়, কু-চিন্তায়, আমার গোনা দিন ফুরায়ে গেল।।
১) তব দয়া নাই অবধি (হারে) দয়াল করছো দয়া নিরবধি ওহে গুননিধি।
তোমায় ভালো বাসলেম যদি, হতো না এমনি কখন।।
২) যখন পাই সুখের দেখা, হারে দেয়াল লাগে না আর তোমায় ডাকা, সবই পারি একা।
মেলে কত মিত্র সখা, অসময় তুমি হও সম্বল।।
৩) তুমি আমায় সুখে রাখবার তরে, (হারে) দয়াল কত কষ্ট স্বীকার করে, শান্তি দাও আমারে।
আহার নিদ্রা তেজ্য করে করতে চাও আমারই মঙ্গল।।
৪) অন্তরঙ্গ যারা তব তত্ত্ব জেনে তারা মত্ত হল তারা, কর্ম দোষে হলাম হারা, একদিন সে ভাবনা না হল।।
৫) গোসাই রাইচরণ আর বনমালী, সখীচরণ কাঁদে প্রেমে বলি, লয়ে চরণ ধুলি।
রশিক বলে যাও সকলি, এ পোরা ভাগ্যে না ঘটিল।।
৬১নং গান তাল-কাহার্বা। রাগ-বেহাগ।
গুরু তোমার সাধন-ভজন এবার নাই বুঝি মোর কপালে।
আমার গিয়ে আছে সব ধর্ম-কর্ম, বাদী হয়ে আত্ম দলে।
১) ঘরের কথা কইলে পড়ে সবে তারে নিন্দা করে, এই ব্যথায় কি ব্যথীত মেলে।
গুরু তুমি সকল ব্যথার ব্যথীত, কইতে নারী পরান খুলে।।
২) কি ভুলিয়া তোমায় ডাকি, জানলেম না তার সন্ধান বা কি,
করলেন বা কি অবহেলে, গুরু তোমাকে আর কব বাকি, যে দয়া করে ছিলে।
৩) যখন ছিলেম যার উদরে, ঊর্ধ্ব পদে কারাগারে, তুমি আমার কাছে ছিলে।
তবে তোমার মত নাই দরদী তাই তুমি আমায় বাঁচাইলে।।
৪) জনম গেল গোলেমালে, গোপাল চাঁদের চরণ ভুলে, ভাগ্য বিহীন রশিক বলে।
চরণ স্পর্শ করতে না দাও যদি, দেখা দিও একাঙ্গালে।।
৬২নং গান তাল-কাহার্বা। রাগ-বেহাগ।
শুধু মুখের বলা বলি কাজের নয়।
আমি মুখে বলি হরি হরি, দুরন্ত মন প্রাণে নাহি লয়।
১) অন্তরেতে দুষ্টুপনা সাধুর মত ভাব দেখায়।
আমার মন সাধু সভায় মিশবার তরে সাধু ভাবের কথা কয়।।
২) কাকে যেমন কোকিল সভায়, কোকিলের ভাব ধরিতে চায়।
কোকিলের সুমধুর তান, দুষ্টু কাকে তাই ধরতে যায়।।
৩) মনে মনে অভিমান করে, আপনি বড় হতে চায়।
দয়াল গুরুর বাক্য ঠিক রাখে না, সমাজে গিয়ে গুরুর গুন গায়।।
৪) সুখ পেয়ে যুবতীর সনে, কৌতুকে তত্ত্ব হারায়।
আমার মন লোক সমাজে গেয়ে বেড়ায় ষড়রিপু আমার বাধ্য হয়।।
৫) দয়াল গোপাল চাঁদ তাই বলছে ডেকে, শোন রে রসিক দুরাশয়।
হোলি ব্যভিচারী অহংকারী, মিছে শাস্ত্র জানলে কি হয়।।
৬৩নং গান তাল-কাহার্বা। রাগ-বেহাগ।
কী কাজ আছে যে নেমেছি অবিবেকী দেহতত্ত্ব মন কে আপন আমিত্ত্ব।
দয়াল গুরুর পদে মনকে বেন্ধে, ঘোচাও রে আপন আমিত্ত্ব।
১) অজপা কি জপে পাওয়া যায়, পরমহংসরূপে গুরুর সাকারে বেড়ায়।
কুলকুণ্ডলিনী যার পদে রয়েছেন, সেই পদে রয় অমূল তত্ত্ব।
২) শূলপাণি যে তত্ত্ব জানি, কিছুতে না পেল প্রেম রাজমনি।
হরি নামে পেয়ে প্রেমের খনি, পাগল হল উম্মত্ত।।
৩) দয়াল গোপালচাঁদের মধুর বাণী, প্রেম ভক্তি ধন তত্ত্ব কিছুই না জানি।
এ দীন রসিক রে তোর অজ্ঞ বানী, জানগে হরি নাম মাহাত্ম্য।।
৬৪নং গান তাল-কাশ্মিরী। রাগ-বেহাগ।
মিছে কেন কানা কানি জানা জানি বল ভেবে, কোন মন্ত্রে বীজ আছে।
হরিনাম মহাবীজ দ্বারে দ্বারে, উচ্চস্বরে বিলায়েছে।।
১) অক্ষর রুপী হরি যখন, নিরাকারে রয় নিরঞ্জন, নামের সঙ্গে মিলন হয়েছে।
প্রেম রুপে আহ্লাদিনী শক্তি, হরি নামের সঙ্গে যোগ হইয়াছে।।
২) কলিতে হরিনাম খাঁটি, মিছে কেবল ফোটা ফাটি, পরিপাটি সকলি মিছে।
হায়রে যাগ-যজ্ঞ হোম তাপস্যাদি, হরি নামের বন্যায় সব ধুয়ে গেছে।।
৩) ব্রহ্মা জপের চতুর্মুখে, শিব জপেছে পঞ্চমুখে, বিনা যন্ত্রে নারদ জপেছে।
ওই নাম গোলকে গোপনে ছিল, হরি আপনি এসে বিলায়েছে।
৪) যে হরিনাম আসতে যেতে, সকল সময় সাথে সাথে, মুক্তি দিতে ভবে আর কে আছে।
আয় ভাই সব মিলে বাহু তুলে, হরি হরি বলি নেচে নেচে।।
৫) ধর্ম পায় কি ভ্রমণ করে, ধর্ম সবার ঘরে ঘরে, বিচার থাকলে থাকে তার কাছে।
হরি নাম যজ্ঞ হয় সকল ধর্ম, শ্রীমদ ভগবত তার প্রমাণ আছে।
৬) গোপাল চাঁদ কয় মধুর স্বরে, হরি থাকে ভাবের ঘরে, তন্ত্র মন্ত্র যায় না তার কাছে।
এদিন রসিক নিজ কর্ম দোষে, ঘুরে মরে লোভের পিছে।।
৬৫নং গান তাল-কাশ্মিরী। রাগ-বেহাগ।
তোরাতো বলিস সবে ভাই, আমার যে ভক্তি নাই শক্তি নাই।
আমার প্রাণ কাঁদে না গুরুচাঁদ বলে ভবে ওই রোগের ঔষধ বুঝি নাই।।
১) গুরুভক্তি নাই মোর মনে, দয়াল গুরু নিদয় কই কেমন ।
কত দুগ্ধ খেয়ে মাতৃস্তনে যার গুনে এ জীবন বাঁচাই।
এ সব দেখে শুনে হয় না মনে আমার পোড়া মন কি দিয়ে বুঝাই।
২) তোমরা সবে যাও গোপাল চাঁদ দেখতে, আমার মন চলে না চাঁদের পথে।
আমি কি হলেম যেন কি হতে এ পোরা ভাগ্যে কিছু নাই ।
আমার পোড়ায়ে পোড়ায়ে জনম গেল পুড়ে, হলেম পোড়া ছাই।।
৩) এ ভাবে আমি অভাগা, আমি হই নাই গুরু সেবা যোগ্য ।
কর্ম দোষে হলেম অজ্ঞ, তবু তার দয়ার বাঁধা নাই ।
আমার এই বাসনা ছিল মনে, সদাই হরি গুন গাই।।
৪) যার চরিত্র পবিত্র থাকে, আপনি হরি তারে ডাকে,
হরিচাঁদ তার হৃদয়ে থাকে, হরি ময় দেখে সর্ব ঠাঁই।
সারা জনম ভরে সূচি রই নাই একদিন, কোন গুনে হরি দেখতে চাই।।
৫) দয়াল গোপাল চাঁদের মধু উক্তি, না থাকলে প্রেম ভক্তি শক্তি।
খাটবে না আর কোনো যুক্তি, মুক্তি তার কোন কালে নাই।
এ দীনবন্ধু রসিক বলে জনম বিফল আমার ভন্ডামী করিয়া বেড়াই।
৬৬নং গান তাল-কাহার্বা। রাগ-বেহাগ।
আমার কর্মদোষে দেহ জমি পতিত হইয়াছে ।
বিশ্বাসের বাঁধ বন্দী ছিল, মদনগঞ্জে ভেঙ্গে নিয়াছি।।
১) নদীর কূলে ছিল মনি গঞ্জের হাট
মদনগঞ্জের বান ডাকিয়া ভাঙ্গিতো কপাট।
তাইতে দেহ জমি হলো কিরাট, অজন্মা মরুভূমি হইয়াছে।।
২) নিরাশ্রয় ছিলেন রে আমি, দয়া করে গুরু দিলেন সাত বিঘা জমি।
তাইতে ফলতো কত রতন মনি, নোনা জল এসে সব পুড়ে গেছে।।
৩) ষোলোয়ানা খাজনা দিতে হয়, তাইতে রতিমাশা কম হইলে দাখিলা না দেয়।
তার আদান প্রদান যদি না হয়, এ নালিশ করব কিয়া কার কাছে।।
৪) প্রেম বারুণী মেলায় গুরুধন, প্রেমের আদান-প্রদান করত যত সাধু মহাজন।
আমি বঞ্চিত হলেন সঞ্চিত ধন, চারি কিস্তি খেলাপ আমার হয়েছে।।
৫) হরি ভক্তের পদে এই মিনতি, গোপাল চাঁদের কাছে রক্ষা করে কর নিস্পত্তি।
এদিন রসিকের হলো দুর্গতি, গোপাল চাঁদের চরণ ভুলেছে।।
৬৭নং গান তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ।
ভালো যদি চাও রে মন, এখন সাধুর সঙ্গ নিবি।
নিলে পরে সাধু সঙ্গ, পোড়া প্রাণ এক কালে জুড়াবি।।
১) দেবে বাঞ্ছে সাধু সঙ্গ, হায়রে পবিত্র করতে অঙ্গ, করে সাধুসঙ্গ।
সাধু সঙ্গে শ্যমত্রিভঙ্গ, সে রঙ্গ দেখলে পাগল হবি।
২) সাধু সঙ্গে যে মহাত্ম, শূলপাণি জেনে তত্ত্ব সাধুর সঙ্গে মত্ত।
মহাভাবে করে নৃত্য, সে তত্ত্ব জানে গঙ্গা দেবী।
৩) কলির মহাপাপী ছিল সাধু উত্তমকে বাঁধিতে গেল মহাপাপের মুক্তি পেল সাধুর চরণ হৃদয় ভাবি।
৪) রসিক বলে সাধুর লক্ষণ, ইন্দ্রিয় বশ করেছে যে জন, সে প্রেমের মহাজন।
মহাভাবে করে কীর্তন, থাকগে গোপাল চাঁদকে ভাবি।।
৬৮নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
বোয়ালের কামড়ে বড় জ্বালা হয়।
আমি কার কাছে কই এমনি কথা, কেউ বিশ্বাস করতে চায়।।
১) দশটা বনের বিড়াল, ছয়টায় পাতি শৃগাল, পাঁচটি রয় রাঘববোয়াল, মুখের কাছে যদি পায়।
তাদের বিচার নাই ভালো-মন্দ, জগতের সব খাইতে চায়।।
২) আর একটি গজের শিরে, ফনিনী বিরাজ করে, বিলাসিতার উপরে কামিনীর সহযোগে রয়।
যদি তিন জনে এক যুগল ধরে, ত্রিভুবন এক সমান হয়।
৩) আর একটি কাব্য হেরি, একজনার তিনটি নারী, থাকে সে জনম ভরি জীবন চাঁদের গাছ তলায়।
আছে রাজ হংসী সরোবরে, কেলি করে সেই জায়গায়।।
৪) রসিক বলে মনের পাগল, তোর দ্বারে এত জঙ্গল।
কিসে তোর হবে মঙ্গল, অমঙ্গলের কারখানায়,
যদি ডাকতে পারো ডাকার মত, ভবের জ্বালা দূরে যায়।।
৬৯নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
এখন কেন রইলি রইলি দেহে ওরে আমার পোড়া পরান।
ও তুই যাওনা কেনো দেহ ছেড়ে পাপে দেহ হবে পাষাণ।।
১) হয়েছি গুরু বিরোধী হরিনামে হই বাদী জন্মাবধি অপরাধ, (কেহ) নাই সমান।
তাইতে কাম গৃহিণী বাসা বেঁন্ধে, দেহ করল শ্মশান সমান।
২) তিনি গুরু সহযোগে, এ দেহের পূর্বভাগে, রাখল কত অমূল্য ধন।
আমি এত ধনে ধনী হয়ে, করলেম না প্রেম ভক্তির সন্ধান।।
৩) পাপে দেহ জরা, জন্মের মত হলেম হারা, বাকি আছে আর কতদিন।
আমি যে কি দিক ফিরি, সেই দিন যেন বাজিতেছে কালের বিষাণ।।
৪) না চিনিয়া গোপালচাঁদে, পড়িয়াছি বিষম ফাঁদে, এ দুঃখের আর নাই অবসান।
এদিন রসিক বলে এ জনমে গাইলাম না গুরুর গুনগান।
৭০নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
সেদিন আমার নাইরে বন্ধু, আসবে কেনে আমার কাছে।
আমি যে ফুল দিয়ে ভালবাসি, সে ফুল বাসি হইয়া গেছে।
১) পূর্বে আমার ছিল যে ভাব এখন আমার নাই সে স্বভাব, সকল অভাব হয়ে গেছে।
আমার থাকতো যদি পূর্বের যে ভাব, দেখা পেতেম মাঝে মাঝে।
২) আর কি হবে তেমনি সুদিন, স্বপ্নেও দেখিনা একদিন
দিনে দিনে ও মর সব যেতেছে।
আমার এমনি সুদিন কবে হবে, তোমার দেখা পাবো বেঁচে।।
৩) যখন আমার ছিল শক্তি, অপরাধ পেয়েছি মুক্তি,
এখন কি মোর সেই দিন আছে।
নাই মোর সেই চেহারা, জনম হারা পরান মাত্র দেহে আছে।।
৪) রসিক বলে ছিলাম বা কি, বর্তমানে হলে বা কি।
আর যে কি বাকি আছে।
দয়াল গোপালচাঁদ জগতের বন্ধু, ভাবুক জনে ভাব জেনেছে।।
৭১নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
মদ্ না বাঘে ধরে নিয়ে গেল রে- আমার বন্ধু কেহ নাই।
১) এই বিপদে রক্ষা করবে এমন কেহ নাই।
আমি এ সংসার সব অন্ধ দেখি, হায়রে যেদিক ফিরে চাইরে।
২) মরম ভাঙ্গিয়া নিলোরে-দেহে কিছু নাই।
দারুন বিষে-জ্বালায় অঙ্গ জ্বলে, আমার প্রাণ করে হাই হাই।
৩) নির্জনেতে নিয়ে গেলোরে - সারা শব্দ নাই।
বিধল পঞ্চ কাটা বিষে আটা, আমার প্রাণের আশা নাই।।
৪) কেউ যদি মোর বান্ধব থাকরে-এই মিনতি জানাই।
আমার গোপালচাঁদে কইও খবর, তোমার রসিক বেচে নাই।।
৭২নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
ওই আমার অবোধ মন, পারবিনা তো কেন করলি সাধুর ভান।
কেন সাধুর মত ভান করিয়ে করলি সাধুর অপমান।।
১) সাধুর মত ভাব দেখালি পাজির মত কাজ করিলি, গেয়ে বেড়াস কিসের গান।
তুই করেছিলি যে দুরাশা সকলি হইল নিরাশা, সমূলে দিলি লোকসান।
২) জানাও সাধুর সঙ্গ করি, অসৎ সঙ্গে বেড়াও ঘুরি, ভুলাতে রমণীর মন।
তুই কার সনে কর চালাকি, তার কি জানতে থাকে বাকি, স্বচক্ষে দেখছেন গুরু গোপাল চাঁদ।
৩) ছিল রাবণ রাজা মহা তেজা, আপন ঘরে মৃত্যু সাজা, যোগী বেশ করে ধারণ।
করে সীতা চুরি লঙ্কাপুরী, সবংশে হলো নিধন।।
৪) তুই যা ছিলি তা ছিলি ভালো, কেন বা এমতি হল, বামন হয়ে ধরবি চাঁদ।
সাধু হওয়া নয় সামান্য, দেবতায় যা করে মান্য।
পূজা করেন সদা ভগবান।
৫) দয়াল গোপাল চাঁদ কয় কর্মেতে হয় সাধু-অসাধুর প্রমাণ।
এদিন রসিকের তোর কর্ম মন্দ, দিলি চোরের ন্যায় সাধুর নিশান।
৭৩নং গান তাল-কাশ্মিরী। রাগ-বেহাগ।
অবোধ মন তোরে কই, ভক্তি করে পড় হরি নামের বই।
১) গুরুর চরণ ক'রে মালা, পড়িতে করো না হেলা, মালা যতনে করিয়ে সই।
আর কিছু শুনিসনে কানে, রাখবি সদা হৃদাসনে, হবিরে মন সর্বজয়ী।
২) পড়বি ধর্ম হাইস্কুলে, মিলে বিশ্বের মেয়ে-ছেলে, বসে সকলে যার যে ঠাই।
পরীক্ষা লবে কাল শমন কোর্সের আসবে যার যেমন মন, মনের কর্ম দিবেনা পাশের সই।।
৩) তার উপরে আছে গুরু মনোবাঞ্ছা কল্পতরু, পাবি যেতে পারলে গুরুর ঠাঁই।
প্রেম উপহার দিতে তোরে, ডুবাবি সেই রুপ সাগরে, দেখতে পাবি গুরুর সনে শান্তিময়ী।।
৪) রসিক বলে মন দুরাচার, গোপাল চাঁদ সর্ব মূলাধার, যার দয়াতে ভবে এবার বেঁচে রই।
এবার হবে শেষ পরীক্ষা, কার জন্য করিস অপেক্ষা, সবে জন্মের মতো সরণ লই।।
৭৪নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
গোপাল আমার দেশে এসেছে।
লয়ে হরি নামের তরনী, বোঝাই প্রেম পরশমনি, প্রেম বারুনী মিলায়েছে।।
১) যার অভাবে সব শবাকার, ছিল দিবানিশি ঘোর অন্ধকার গো-
পশু পক্ষী সবে কাঁদতেছে।
শুনে ভক্তগণের ক্রন্দন, ভক্তাধীন গোপাল চাঁদ, লক্ষীখালী নেমেছে।।
২) সবার মুখে গোপাল বাণী, শুনি চতুর্দিকে গোপালধ্বনী গো, সর্ব জীবনে সুদিন হইয়াছে-।
দেশে ছিল না কালো কোকিল আজ তাহার গানের অখিল, সংসার কুসুম ফুটেছে।।
৩) বহে হরিনামের বন্যা, উঠল চতুর্দিকে প্রেমের কান্না গো, হিন্দু-জবন সবাই কাঁদতেছে।
যার গুনে বাধ্য ত্রিভুবন, কে আছে তাহার সমান, মরিলে বাঁচাইতেছে।।
৪) ছুটল দেখতে গোপালচাঁদে, যত পুরুষ-নারী কেঁদে গো।
নয়ন জলে বয়ান ভাসতেছে-। সবে হরি বলে চলে যায়, এদিন রসিকের আর নাই উপায়, বৃথা জনম গিয়াছে।।
৭৫নং গান তাল-কাশ্মিরী। রাগ-বেহাগ।
ওরে ব্যথা বোঝোবার কি ব্যথিত আছে, ও যার বুকের মানিক হারিয়ে গেছে।
লয়ে দুঃখের কপাল, পথের কাঙ্গাল, কেঁদে কেঁদে হাই ছাড়তেছে।।
১) ভালবেসে বুকের মাঝে শেল মেরে গেছে।
সে যে কেমন জ্বালা যায়না বলা, জানে যার যার লেগেছে।।
২) পোড়া দেহ পোড়ায়ে পোড়ায়ে গঙ্গার হইয়াছে।
তার ভেতর বাহির পুড়ে, কালি হইয়া গিয়াছে।।
৩) কাঁদবার কপাল কাঁদতে হবে, যতদিন বেঁচে আছে।
যে দিন পরান যাবে শান্তি হবে, সব জ্বালা যাবে ঘুচে।।
৪) এদিন রসিক বলে এত দুঃখে, কাজ কি আর বেঁচে।
সারা জনম গেলো শোকে দুঃখে, ভাগ্যে আর যেন কি আছে।।
৭৬নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
কপালে দুঃখ থাকিলে কে কারে সুখ দিতে পারে।
হলে বিধি বাদী নিরবধি, দুঃখের কান্না কেঁদে ফিরে।।
১) কথায় কথায় বলে অনেকজন, খেতে রোয় কপালে ফলে, শাস্ত্রের বচন।
যদি ভালো না হয় কারণ কারণ, তার দুঃখ যায় না রে আর জনম ভরে।।
২) দুঃখীর প্রতি কারো দয়া হয়, সযতনে খাওয়াইয়ে সোয়ায় বিছানায়।
দুঃখী সুইলেও সুখ বিছানায়। চিন্তায় রাত কেটে যায় উজাগাঁড়ে।।
৩) মানুষ মাত্র নিমিত্তের ভাগী, সকলি স্বকর্মে করে, সুখ-দুঃখের ভাগী।
কেহ জন্মাবধি রোগ ভুগি, সে জ্বালায় অবশেষে প্রাণ ত্যাজ্য করে।।
৪) দয়াল গোপাল চাঁদ কয় দুঃখ আর কিসে, দুঃখ নিবারণ হরিচাঁদ মোর, এলেন এদেশে।
তারে ডাকোরে সেই বেহাল বেশে, রসিক দুঃখ পায় আলস্য করে।।
৭৭নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
আছি সাড়ে তিন রত্তিতে ভাণ্ড গড়া।
ভূঃ ভূর্ব স্বঃ বর্ণেতে যত ফান্ডের মধ্যে পোড়া।
১) ব্রহ্মলোক, চন্দ্রলোক তাতে রুদ্রলোক দক্ষিণেতে।
(বিংশতি পাঁচ) পঞ্চবিংশতি গুনে ঘেরা।
তাতে গয়া, গঙ্গা, শ্রীক্ষেত্র, প্রয়াগ, মথুরা।
২) তিন তারে খবর চলে, তার মিলায় কালে কালে।
আছে পঞ্চ খামের বলে, তার রয়েছে ধরা।
ও সেই সোহং শব্দে চলে সদায়, হংস ধরে সাধু যারা।
৩) রসিক বলে মন পাগলা, ছেড়েদে মায়ার খেলা।
সাঙ্গ হলো ভবের খেলা, বেলা হ'ল সারা।
সেজে নশ্বর ভান্ড, বিষম কান্ড, পলকেতে ভাঙ্গা সারা।।
৭৮নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
গোপালচাঁদরে- ও গোপালচাঁদ রে,
যেওনাগো এ কাঙ্গালের দুঃখ দেখে।
দুঃখে দুঃখে জনম গেল বাঁচি কোন সুখে।।
১) তুমি যে কাঙ্গালের সখা, তাই এলে দিতে দেখা, নইলে কে দেখে।
তোমার যদি না পাই দেখা মরন সন্মুখে।
২) ছাড়িলো মাতা-পিতা, ছাড়িলো বন্ধু-ভ্রাতা অসময় দেখে।
গোপাল তমা বই, কেহ নাই, শুধাবে ডেকে।
৩) নাই আমার কোন ধন, তুমি যে সর্বস্ব ধন, জীবনের পথে
আমার সুখ-দুঃখের সাথী, তোমা বই আর কে আছে।।
৪) ব্যথার ব্যথিত কেহ নাই, ঘুরে দেখলাম সর্ব ঠাঁই ব্যাথা বুঝবে কে?
যারে ভাবি আপন, সেও ব্যথা দেয় বুকে।।
৫) যে সুখে আছি আমি, সকলি জানো তুমি, তোমা বই আর জানে কে।
তোমার যা ইচ্ছা হয় করতে পারো তোমার রসিককে।।
৭৯নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
তব দয়া বিনে গুরু সুফল ফলে কার,
তুমি গুরু কল্পতরু, ফলাতে পার।।
১) বিধির পরে তোমার বিধি, তুমি অনাদির আদি।
মুছে ফেলো বিধির বিধি, মৃতদেহে প্রাণ সঞ্চার।।
২) মেটে পাত্রে সিংহ দুগ্ধ, তুমি রাখলে রাখতে পারো।
সফল করতে পারো, তুমি ভাঙ্গো আবার গড়।।
৩) কখন হাসাও কখন কাদাও, কি খেলা যে তুমি খেলাও।
কখন দুঃখ সাগরে ভাসাও, আবার তুমি কোলে কর।।
৪) মনে যাহা ভাবি আমি, সকলি জানো তুমি।
গুরু অন্তর্যামী, তুমি হরি তুমি হর।।
৫) সাধু সখি চরণ বনে, কি ভাবছি গোপাল বিনে।
রক্ষা নাই তোর কোন দিনে, এদিন রসিক দুরাচার।।
৮০নং গান তাল-কাওয়ালী। রাগ-বেহাগ।
(নারী শিক্ষা)
যদি সতীত্ব রাখিবি রে, যদি সতীত্ব রাখিবি।
স্বামি পদে জন্মের মতো, মন- প্রান সপিয়া দিবি।।
১) দিবা-নিশি স্বামী চিন্তা অন্তরে রাখিবি।
স্বামী গুরু, পিতা- মাতা, স্বামী কে সর্বস্ব ভাবি।।
২) সতী ধর্মের জেনে মর্ম, সাবিত্রী বেহুলা দেবী।
তারা মরা পতি কোলে করে যমের কাছে করেছে দাবি।।
৩) আর এক সাধ্যা ছিল পদ্ম স্বামী বেড়াতে মাথায় করি।
হরি কর জোরে পদ্মার দ্বারে কাঁদছে সকল দেব-দেবী।
৪) স্বচক্ষে দেখিলাম আমি লক্ষীখালী দেব-দেবী।
সতী পতির মরন দেখতে দেখতে সেও ম'লো চরণ সেবি।।
৫) রসিক বলে স্বামী গুরু একদিন দেখলেম না ভাবি।
কেহ গুরুর চরণ ভুলে গিয়ে আমার মতন যাস নে ডুবি।।
৮১নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
গোপাল চাঁদের-সারা জনম গেলো ভব রোগ ভোগে।
আমার এমন বান্ধব কেউ হলো না গো।
সৎ বৈদ্য এনে দিবে আমার এই রোগে।।
১) এ রোগের মোটে আরাম নাই, জন্মিছে ক্ষেত্র বৃদ্ধি বাই।
তাইতে হরি নামে রুচি নাই।
আমায় কাম কুপথ্য, খাওয়ার নিত্য গো- ঘরে আছে ছয় জন একযোগে।।
২) সাধুসঙ্গ মুষ্টিযোগ তাতে মোর মন হলো না যোগ,
দিনে দিনে বাড়লো ভবরোগ।
তাইতো ঘটলো আমার পিতৃ বিয়োগ গো- আমায় ছাড়লো অনুরাগে।।
৩) দিনে দিনে হতেছি দুর্বল, শ্লেষ্মা হতেছে প্রবল, সর্বাঙ্গ হতেছে বিকল।
এ জনম হলো বি ফল গো- কি যেন আছে আমার শেষ ভাগে।।
৪) গোসাই লালচাঁদ আর পুলিন, চরণে হয়ে আছে লিন, কেঁদে বেড়ায় রাত্র-দিন।
গোপাল রুপ সাগরে হইরে মীন গো- তারা এড়ালো ভবরোগে।।
৫) দয়াল গোপালচাঁদ তাই কয়, যার ব্যাধি সে সারিলে হয়, তা'ত অন্নে সারা দায়।
কত সারিতেছে গুরুর কৃপায় গো- রসিকের সরলোনা কম ভোগে।।
৮২নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
সুখ আর দুঃখ দুই ভাই মিলে জগৎ মাঝে ঘুরিতেছে।
সেইখানে সুখ, সেইখানে দুঃখ, সুখের পিছে দুখ আছে।।
১) সুখের আছে এমনি রীতি, মানুষ করে ছন্ন মতি,
সুমতির ঘটায় কুমতি, ঘুরে মরে লোভের পিছে।।
২) অহংকারে হয়ে মত্ত, হারাইয়ে পরমতত্ত্ব।
কামিনী কুরসে নিত্যকালের মুখে পৌঁছে।।
৩) দুঃখের আছে এমনি ধারা, মানুষ করে আত্মহারা।
দু নয়নে বহে ধারা, হরি প্রেম আপনি যাচে।।
৪) পাঠিয়ে দেয় শান্তিপুরে, শান্তি মার স্নেহাগারে।
নিত্য ধনে আশ্রয় করে, প্রেমানন্দে বেড়ায় নেচে।।
৫) দয়াল গোপাল চাঁদে বলে, সুখ পেলে কি হরি মেলে।
হরি দুঃখীর হৃদ কমলে, রসিকের জনম মিছে।।
৮৩নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-যৎ
মনের মতো ঘর বাঁধিয়ে থাকে সে ঘরের ভিতরে।।
১) দুই খামের পর বাধছে সে ঘর, দেখতে শুনতে কি চমৎকার।
দুইটি বাতি মটকার উপর, চলতেছে দম হাওয়া ভরে।।
২) অষ্টাদশ রশের ছাউনি, মধ্যে কত রতন মনি।
প্রেমিক জ্ঞানী তত্ত্ব জানি, দেখতে পায় ঘরের ভেতর।।
৩) ঘরে আছে তিনটি নারী, সপ্ত-তালা বেড়াই ঘুরি।
খবর কয় জীবন কাছারি, ঘোরে সর্বকালের ঘরে।।
৪) গোপাল চাঁদ কয় দিবা-নিশি, দারুন কর তত্ত্বমসি,
দেখতে পাবি ওই রূপরাশি, কি বলিব রসিক তোরে।।
৮৪নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
কোন গুণেতে পাবো তমায় দয়াল গুরু ধন।
আমি কত জন্মের অপরাধী, আমার নাই কোন সাধন-ভজন।।
১) মিছে কেন এলেম ভবে, তোমার নামের ধ্বনি শুনে পার হবো সবে।
আমার কপাল মন্দ, যায়না সন্ধ, গুরু আমি অতি অভাজন।।
২) সব গেল মোর স্বভাবের দোষে, প্রেমিক জনার প্রেম থাকেনা আমার বাতাসে।
এ মুখ দেখলে পরে ভাব যায় দুরে, আমি বেঁচে থাকি অকারণ।।
৩) জন্ম নিলেম মানুষের ঘরে, না জানি কোন কর্মফলে মানুষ আকারে।
হইয়ে ব্যভিচারী জনম ভরি, আমি কুকর্মে হইয়ে মগন।।
৪) কাঁদে রাজেন আর পুলিন গোসাই, গোপাল বিনে এ ভুবনে বন্ধু কেহ নাই।
এদিন রসিক বলে ভবের কুলে, আমার অকালে হল মরণ।।
৮৫নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
একবার ফিরে দেখে যাও রে ও গোপাল চাঁদ-কাঙ্গাল বলে যেও না ফেলিয়া।।
১) আমি জনম ভরে দিলাম ব্যথারে, তুমি রয়েছো সহিয়া।
তোমার মতো আর কি আছে, আমার ব্যথার ব্যথিত হইয়া রে।।
২) আমার অপরাধ হইয়াছে বেশিরে তোমার চরণ ভুলিয়া।
তোমার মুখ পদ্ম বাক্য শুনলেম না শুনিয়া রে।।
৩) তোমার চরণ হারা হইয়ারে আমি বেড়াই অনাথ হইয়া।
আর কতকাল রবো দয়াল আমার বুক ভরা দুঃখ লইয়া রে।।
৪) তুমি হইও কল্প বৃক্ষ দয়ালরে, আমি রবো লতা হইয়া।
আমার সকল দুঃখের কথা কবো তোমার দুই চরণ ধরিয়া রে।।
৫) রসিক বলে জনম ভরে রে রোলেম অপবিত্র হইয়া।
আমার যায় যেন প্রাণ হরি বলে, তোমার চরণের দিকে চাইয়ারে।।
৮৬নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
আমার কি করেছো হরি,
কি যেন কি করিয়ে- মরমেতে মারিয়ে, মন প্রান নিলে হরি।।
১) মন লাগেগে না কোনো কাজে, ঐ রুপ মনে পড়ে মাঝে মাঝে গো-।
যে আগুনে জ্বলিয়ে মরি হরি তা কি তুমি জানো না,
যিনে কেন ছলনা, যে জন্য কুলো মান ছাড়ি।।
২) দিয়ে তুমি ভালোবাসা, করো নাকি এমনি দশা গো- তুমি কি আর দেখ না ফিরি।
এত নির্দয় হলে কবে দয়াময় বলে সবে, শুনি এ জগৎ ভরি।।
৩) দেখা দিয়ে লুকাইলে, এমনি দেখা কেন বা দিলে গো-
কি দেখা পাবো না ফিরি।
যদি এমনি ভাবে দিন যায় বেঁচে থাকিবার আশায়, ইচ্ছা হয় এখন মরি।।
৪) ছেরে এলেম পিতা-মাতা, আমায় ছাড়লো বন্ধু-ভ্রাতা গো-
আত্ম-স্বজন সব গেল ছাড়ি।
আমার সে কূলেও কূল নাই, কোন কুলে ঠাঁই না পাই (দয়াময়) অকূলে ডুবে মরি।।
৫) তুমি তো সেই ব্রজের গোপাল কত ভালবেসে ব্রজের রাখাল গো-
ফাঁকি দিয়ে সব এলে ছাড়ি।
ম'লো যতো গোপী গণে তোমারি অদর্শনে, রসিকের কত দেরী।
৮৭নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
এমনি করে ছেড়ে যাবে গো-
ও দরদী, আমায় কেনে না গেলেই বলিয়া।
১) পিতা-মাতা আমায় দিল রে- তোমার ওই পদে সঁপিয়া।
তুমি তো এনেছ মরে আত্মসাৎ করিয়া।।
২) আগে যদি জানতেম আমি যে, তুমি যাবে রে ছাড়িয়া।
জন্মের মত রাখতেম দু'টো, শেষ কথা বলিয়া রে।।
৩) আমার মনের আগুন দ্বিগুণ জ্বলেরে, জলে রহিয়া রহিয়া।
আমার ভাঙ্গা বুকের ব্যথা ভরা জড়াবো কি দিয়া রে।।
৪) আমার মন লাগে না কোন কাজে রে- বান্ধব তোমায় হারা হইয়া।
আমি কত জন্মের অপরাধী, বাঁচি কি লাগিয়ারে।।
৫) রসিক বলে পরের ঘরে রে- কয়দিন রব পর হইয়া।
তুমি আপন হ'তে আপন আমার, তাই গেলে ফেলিয়া রে।।
৮৮নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
বিদেশে কেন থাকবি রে মনা, চলো যাই মোরা গোপাল দেশে।
আমরা সেই দেশের ভিখারী হয়ে, মেগে খাব দেশে দেশে।।
১) গোপাল দেশের এমনি রীতি, মানুষ করে ছন্ন মতি, যায় গোপালের সঙ্গে মিশে।
শেষে হৃদয়ে জ্বলে গোপাল বাতি, নয়ন জলে বয়ান রে ভাসে।।
২) হিংসা, নিন্দা, বিদ্বেষ ভুলি, সবার সনে কোলাকুলি, প্রাণ গলে যায় গোপালের রসে।
গেলে যাবে ভ্রান্তি, পাবি শান্তি, প্রাণ জুড়াবি সাধুর বাতাসে।।
৩) যারে ভাব আপন আপন, সেতো আপন নয় রে কখন।
ঠিক পাবি তুই দিনের শেষে।
ও তুই হা-হুতাশ বাতুলের মত, একা একা কাঁদবি বসে।।
৪) যে দেশে নাই ভালবাসা, কর তুমি কার ভরসা, কেবা তোমায় ভালোবাসে।
ওরে চোখ ঢাকা বলদ এর মত, ঘুরছো মায়া ঘানির পাশে।।
৫) রসিক বলে দেখলেন যত, সবে বলে যার যার মতো, কেমনে থাকি এদেশে।
যারে ভালোবাসি সে করে দোষী, এ দুঃখ মোর যাবে কিসে।।
৮৯নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
তোমার যা ইচ্ছা পার করিতে, পারি না আর তোমার নাও বাইতে।
আমার জনম গেলো বাইতে বাইতে, ভবে আসিলাম কি এই নাও বাইতে।।
১) মাঝি কারে দিলে আমায় মাল্লা সহিতে।
তারা ছয় যন ছয় দিকে টানে, পারলেম না আর ঠেকাইতে।।
২) নব দারের তরী যত, ভবন নদীতে।
আমার ভাঙ্গা তরী, ঘোলায় পরি, ভাঙ্গা হাইলের বে-যুতে।।
৩) সুজন মাঝি হয় না রাজি, এই ভাঙ্গা তরীতে।
আমি না বুঝিয়া উঠিয়াছি কাজ নাই আমার পাড়িতে।।
৪) গোপাল চাঁদের সকল তরী, ভব নদীতে।
এদিন রসিক বলে, আগে জানলে উঠিতাম রেলগাড়িতে।।
৯০নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
আমি মিছে কেন জন্মেছিলাম, এমন সুপবিত্র মানব কুলে।
এমন প্রেম ভক্তি ধন হারা হয়ে সাধের জনম যায় বিফলে।।
১) হয়েছি মানুষ বটে, মানুষের কাজ করলাম না মোটে
কি যেন কপালে ঘটে, বন্দী পড়ে মায়াজালে।
আমি যেমন মানুষ তেমনি সাজা কে রাখিবে এ প্রাণ গেলে।।
২) তবু গুরুর দয়া ভারী, আমায় রাখছেন কত দয়া করি,
সব জনম ভরি, ঘৃণা নাই তার পতীত বলে।
যেমন পিতা-মাতা ক-সন্তান প্রানান্তেও কি ফেলায় ঠেলে।
৩) হল না মোর সাধু সঙ্গ, ত্রিতাপে দহিছে অঙ্গ,
আমর সনে চায় করতে কু-সঙ্গ, সাধুসঙ্গ নাই কপালে।
আমার নাই সে শক্তি পাব মুক্তি, ছয় জন বাদি হয় এক দলে।।
৪) পিতা-মাতার পুণ্যের জোরে, এবার পেয়েছিলাম যারে,
রতন পেয়ে চিনে চিনলাম না রে, আর কি হবে এই কপালে।
যারে যোগী ঋষি পায়না ধ্যানে, যার জন্য হরি গোপাল হলে।।
৫) রসিক বলে তুমি দুষ্ট, চিরদিন মোর দুরদৃষ্ট।
কিসে যাবে মনের কষ্ট একনিষ্ঠ না হইলে।
আমার এই দশা ঘটেছে দয়াল গোপাল চাঁদের বাক্য ফেলে।।
৯১নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
কর মন গোপাল পূজার আয়োজন।
কর গুরুচিন্তা, যাবে চিন্তা, পাবিরে যুগল চরণ।।
১) হৃদপদ্ম কমল আসন, বিশুদ্ধ করো আমার মন,
মনের সাধে বসাও চাঁদের বামেতে কাঞ্চন।
জেলে জ্ঞানের বাতি দিবা-রাতি, দেখবি রে যুগল মিলন।।
২) প্রেম ভক্তি নয়ন জল দিয়ে, সাদরে চরণ ধোয়াইয়ে,
অনুরাগ তুলসি, শ্রদ্ধা-চন্দন ওই পদে মাখাইয়ে।
বাজাও নামের ডংকা, যাবে সঙ্কা প্রেমানন্দে হও মগন।।
৩) কামকে দাও গুরুর সেবায়, ক্রোধকে দাও তার পাহারায়,
লোভ মোহ হরি নামে মেতে থাকুক সদায়।
হায়রে মদ মাৎসর্য করুক হরিনামের প্রেম আস্বাদন।।
৪) রসিক বলে এ সময়, বসে রলি কার আশায়,
ও তোর একে একে সকল গেল, কেহ না ফিরে চায়।
দয়াল গোপাল চাঁদ ওই হল উদয়, আমার মন কেনো রলি অচেতন।।
৯২নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
সুখ হল না এ জনমে হরির নাম ভুলে,
মিছে এলেম কেন মানব কুলে, কি যেন আছে এই কপালে।।
১) সংগের পাকে রঙ্গ করে ডুবল বেলা সাধন বিনে।
আমি সার করলেন নয় গুরু ধরে, কি হবে মোর শেষ কালে।।
২) হরি নামে যে কত মধু, মধুর মর্ম জানে সাধু।
আমি বঞ্চিত রলেম শুধু, সাধুসঙ্গ নাই কপালে।।
৩) গুরুর কাছে এই মিনতি সে অগতির গতি,
দয়াল তুমি বিনে আর কে আছে, রাখবে আমায় চরণ তলে।।
৪) ভূপাল রাজেন ডেকে বলে, ফরেন তোর নাই কপালে।
ও তুই ধোয়াইয়ে দে, গোসাই রসিকের রাঙা চরণ দুই নয়নের জলে।।
৯৩নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
হরি আমি তোমায় চিনলাম নারে।
আমি মায়া পাশে বন্দী হয়ে, সাধের জনম বইয়া যায় রে।।
১) গুরু রুপে হরি তুমি এসে এ সংসারে।
তুমি হরি হয়ে হরি বলে, নাম দিলে সকলেরে।।
২) সকলে সু কর্মফলে পেয়েছে তোমারে।
আমি করি মন্দ, যায় না সন্দ, ডুবে রল এম অন্ধকারে।।
৩) আমার মত দুরাচারী রাখতে নাই সংসারে।
হরি তবু আমায় ভালোবেসে, রেখেছো কত দয়া করে।।
৪) দয়াল গোপাল চাঁদের রূপের কিরণ লেগেছে যার অন্তরে।
তার মন প্রাণ হরে নিয়ে ভাবের পাগল সাজায় তারে।।
৫) অন্ধের কাছে মানিক দিলে তাই কি চিনতে পারে।
এদিন রসিক নিজে কর্মদোষে গেল ছারেখারে।।
৯৪নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
আমি দেখলাম এ সংসারে-(২)
দারুন কলির প্রভাবেতে বুদ্ধিমান হয় ঘরে ঘরে।। (২)
১) ঘরে ঘরে সামাজিকতা, সবে কয় সমাজের কথা,
মানে না মাতা-পিতা কে বোঝাবে কারে।
কোনদিন যা ছিল না সেই সব হতেছে রে।
সবে উচ্চ বিদ্যা শিক্ষা করে, গৌরবের দায় কাছা ছাড়ে।।
২) ভালোমন্দ বিচার কি ছাই, তর্ক করে জয়ী হওয়া চাই,
যেমন সর্বজয়ী পন্ডিতের ঠাঁই নিমাই পন্ডিত হারে।
বীণা তর্কে জয়ী পত্র লিখিয়া দিলাম তারে,
পন্ডিত মনে মনে ভাবছে সদায়, হরি কে ঠকায়েছে রে।।
৩) শিখতে হলে মাতব্বরি করতে হয় কি পরদ্বারী,
ইহার কারণ বুঝতে নারি পয়সাতে সব করে।
বুক টান মেরে কথাবলে পূর্ণ অহংকারে,
হরি ভক্ত দেখামাত্র তাড়িয়ে দেয় দেশান্তরে।।
৪) কেহ সাধুর সঙ্গ নিলে, কত মন্দ তারে বলে,
কেহ চেপে ধরে গলে, কেহ বা তায় মারে।
হরি ভক্তের এ যন্ত্রণা হরি সইতে নারে-
হরি সকলেরে ভালো কর, রসিক তাই বাঞ্ছা করে।।
৯৫নং গান তাল-কাহর্বা। রাগ-বেহাগ।
যে দেশে মনের মানুষ নাই, সে দেশে কেমনে থাকি,
আমার মন উতলা, অন্তর জ্বালায় জ্বলে গেলে জড়ায় নয় কি।।
১) বনপোড়া হরিণের মতো ঘুরে বেড়াই অবিরত, তবু তারে না দেখি।
মনের মানুষ বিনে নিশি-দিনে একা বসে কানতে থাকি।।
২) আমার ভাই আছরে, বলে দিতে পারো তোমরা, সে তোমাদের হৃদয়ের বাতি।
তোমরা তার কাছে জিজ্ঞাসা কর আমার হবে কি গতি।
৩) আমার রসিক গুণ মনি, ছিল সে প্রেমের খনি।
তোরা তো সকলে চিনলি।
আমি পাপের আগুন জালাইয়া সেই আগুনে পুড়ে সখি।
৪) এপাপের আর নাইরে ক্ষমা, চাইতে তার চরণ পেলাম না, অপরাধ হয়েছে বেশী।
আমি গুরুর চরণ ভুলে গিয়ে একা বসে কানতে থাকি।।
৫) গোসাই রাজেন বলে হরেন রসিক যে পতিত পাবন।
গোপাল পদে বান্ধা আখি, ছেড়ে কু ভাবনা স্মরণ নে না, না ডাকলেও লবে ডাকি।।
৯৬নং গান তাল-কাশ্মিরী। রাগ-বেহাগ।
(রাম প্রসাদ)
কি হবে তোর শুচি পনায়, মন তোর দিন কেটে যায় কু-ভাবনায়।
একবার হরি বলনা মন রসনায়, কাজ কিরে দেব-দেবী জানায়।।
১) রুহিদাস মুচি সর্বশুচি ভগিরথ তার প্রণাম জানায়।
হরে হরিবোল হৃদয় খোলা, অন্য বুলি নাই রসনায়।।
২) রামের ভক্ত হনুমান শৌচাচার যার মোটে জানে নায়।
হনু ভক্তির জোরে বক্ষ চিরে, যুগল রূপের মূর্তি দেখায়।।
৩) দুঃশাসনে বসন টানে দ্রৌপদীর করুন কান্নায়।
হরি আপনি বসন হলেন তখন, দ্রৌপদীর করুন কান্নায়।।
৪) কুকর্মের মত অশুচি এ সংসারে আছে কোথায়।
করে তিন বেলায় স্নান গঙ্গা জল পান তাইতে কি অশুচি মানায়।।
৫) যে নামের জগত পবিত্র মত্ত গঙ্গা যার সাধনায়।
এমন সুধাময় হরিনাম ছুঁয়ে, মরলি কেন ঘর পানায়।।
৬) দয়াল গোপাল চাঁদ কয়, আয় সবে আয় হরিচাদের প্রেমের মেলায়।
রসিক রে তোর সব ঘুচায়ে হরিচাঁদ বল রসনায়।।
৯৭নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ।
৯৮নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ।
৯৯নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ
আমার মন পাখি কার মায়ায় ভুলে, রলিরে বিদেশে ।
কেহ হরি নাম মুখে বললি নে। (২ ) ।।
১) হরি হরি বল মুখে, এ জনম যাবে সুখে শমন ছোবে না তাকে ,
চেয়ে দেখ পিছনের দিকে, শমন তোর পিছে ।
যেদিন ধরে নেবে কাল বিড়ালে রে, সেদিন লুকাবি তুই কোন দেশে ।।
২) যেদিন শমন এসে করবে ধরা, ভাই বন্ধু আছে যারা,
চারিদিকে কাঁদবে তারা, সেদিন সব থাকবে তোর পিছে ।
শমন এসে বাঁধবে কষে রে, সে দিন আধার হবে দিবসে ।।
৩) হরি হরি মুখে বলো, ভক্তির দুই পাখা তোলো , সাধু সঙ্গে উড়ে চল ,
এ সময় তোরে যাওয়া ভালো নইলে থাকবি রে বিদেশে ।
হায় হুতাশ এ প্রাণ যাবে রে, সে দিন কেউ যাবে না তোর তালাশে ।।
৪) গুরুর নামটি ভুলে গিয়ে, সুন্দরী রমণী পেয়ে ,
রইয়াছো মন তার দিকে চেয়ে, মূল তোর খেয়ে গেছে, অবোধ মন বুঝবি রে শেষে ।
দিন প্রসন্নের সময় গেল রে , ও তুই বসে রলি কার আশে ।।
( শ্রী প্রসন্ন কুমার মন্ডল )
১০০নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ।
দয়াল গুরু বলে কাঁদেনা আমার মন , হারে আমি যাব কোথায় ।
রিপুর বসে কর্মদোষে সাধের জনম বৃথায় যায় ।।
১) গুরুর পদে না হয় মতি , গুরত না হলো আত্তি , নাই মোর সাধন শক্তি ।
নিজগুনে দয়া করে মোরে রেখো রাঙ্গা পায় ।।
২) মহা পাপী আমি দুরাচারী , তোমার নাম লয়ে না কাটতে পারি, জ্বালায় জ্বলে মরি ।
মন পোড়ে আর অঙ্গ জ্বলে , জলে গেলে না জুড়ায় ।।
৩) ভাঙ্গন নদীর কূলে বসি , আমি ভাসিতেছি দিবানিশি , ওহে কাল শশী ।
কোন দিন যেন কুল ভাঙ্গিয়ে , কালস্রোতে ভেসে যায় ।।
৪) পূর্ণ চাঁদ আর অভয়চরণ ,তারা দেখিয়া সেই রূপের কিরণ , দেহ করে অর্পণ ।
দিবানিশি চোখের জলে , তারা কেঁদে বুক ভাসায় ।।
৫) অভয়ের এ বৃথা জনম , গোসাই গোপালের চাঁদের যুগল চরণ , পদে না লয় তার মন ।
রিপুর বসে বাধ্য হয়ে , এমন রত্ন ধন হারায় ।।
( শ্রী অভয় চরণ হালদার )
১০১নং গান, তাল-
( শ্রী শ্রী বিষ্ণুপ্রিয়া খেদ )
চিতেন ঃ সুখ সজ্জাতে ভাজার সঙ্গে , সুখে রঙ্গে ছিলেন গৌরাঙ্গ ।
পরান ঃ হায় হায় না হতে নিশি ভোর , না হতে শশী ঘোর ।
সোনার গৌর করলেন নদে লীলা সাঙ্গ ।।
ফুকার ঃ উঠিল ভাস্কর পুষ্কর শর্বরী প্রভাত, হয় এ প্রভাত কি সু প্রভাত , হায় হায় পালস্কেতে হস্ত দিয়ে ,
শূন্য শয্যা নিরিখিয়ে , কাঁদে বাণী বিষ্ণুপ্রিয়ে , হায় হায় মন্দিরে নাই প্রাননাথ ।।
ছুটি ঃ পতির বিরহে ভাসে সতী নয়ন জলে , ঊষা সুন্দরীর , প্রতি বলে অতি বিনয় করে ।
মুখ ঃ উষা বল বল , তুমি কি দেখেছ বল , আমার প্রান ও নাথ কোথায় গেল , এত নিশি ভোরে ।।
ডাইনা ঃ হলে অন্যদিন নিশি ভোর , সুমধুর ভোরের সুর আলাপনে , যেত বন্ধু প্রাতঃ সানে ।
আজ কেন এমন দেখি নাচিছে দক্ষিণ আখি , আমার হৃদয় পিঞ্জিরার পাখি , গেল বুযি উড়ে ।।
খাদ ঃ দুঃখে ফাটে বুক , হয় মনের দুঃখ বলব কারে ।
ফুকার ঃ কত সোহাগে , কি অনুরাগে , কত নিশিতে , বন্ধু এ দাসীর মন তোষতে ।
হায় হায় করে কত রসিকতা , খেয়ে অবলার মাথা,
দিয়ে গেল তৈল সরিতা , ( যেমন ) প্রদীপ নির্মাণকালে ।।
ছুটি ঃ যারা দেশ ছেড়ে বিদেশে যাত্রা করে , ঊষা সুন্দরীর করে ধরে , ঊষা যাত্রা করে ।
অন্তরা ঃ এমন সোনার নবদ্দীপ প্রদীপ শূন্য হলো হায় ।
মরি হায় হায় আমি বাত্যাহত লতা স্থান পাব কার পায় ।
প্রতিদিন কোকিল করে কুহু কুহু , আজ কেন প্রভাতে করেনা উহু , উহু মুহুর্মুহু শোনা যায় ।
শুনতে ভোমরের গুন গুন , কৃষ্ণ গুনাগুন, আগুন আগুন রবে আগুন দিচ্ছে গায় ।।
পরি চেতন ঃ জ্বালিয়ে মোমের বাতি ইতি-উতি করলেম অম্বেষণ ।
পরান ঃ হায় হায় উদিল দিননাথ , না দেখে প্রাননাথ , বজ্রের আঘাত পাইল আমার শিরে যেমন ।।
ফুকার ঃ কত জন্মেতে , কত কর্মেতে , করেছিলাম পাপ , দিল কেন রমনী অভিশাপ ।
হায় এ নবযৌবনের কালে , পতি গেল সতী ফেলে ,
পতিত পাবন পতি বলে , হায় হায় গঙ্গা জলে দিব ঝাঁপ ।।
ছুটি ঃ আমার বুকে শেল দিয়ে গেল প্রাণ পতি-ভাগ্যবতী সেই লক্ষ্মী সতী সর্পাঘাতে মরে ।।
( শ্রী হরিনারায়ন আচার্য )
১০২নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ
দিনের বান্ধব রে গোপাল আমার , দিন থাকতে ডাকলেম না তোমায় ।
এখন ওইযে সমন ছুটে এল , কি হবে আর উপায় ।।
১) অসার সংসারে করলেম পরিশ্রম সার , সাথের সাথী ভবে কেহ হবে না আমার ।
মিছে যারা পুত্র --পরিবার , তারা স্বার্থের বন্ধু এ ধরায় ।।
২) যে খেলা খেলিতে আমারে পাঠালে সংসারে , মায়ার খেলায় ভুলে তোমায় ডুবলেম পাথারে ।
এখন দাড়ি মাঝি রাজি নয়রে , পার করতে হে অভাগারে ।।
৩) পুবের বেলা পশ্চিমে গেল ,করে ধূলি খেলা , খুঁজে মরি সন্ধ্যা বেলা , ভব পারের ভেলা ।
এখন সারা হলো ঐ শমন জালা , সাথের সাথি কেহ নয় ।।
৪) মন্মথ কয় দয়াল গোপালএই তুমি করিও , যম-যাতনা জ্বলে মরলেও ,ডাকতে তোমায় দিও ।
না হয় জন্মের মত ডুবাইও , এই বাসনা সদায় ।।
( শ্রী মন্মথ রঞ্জন মিস্ত্রী )
১০৩নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ
সখী -- আরকি পাব পরান গোপাল, অন্তর যায় জ্বলে -- তার বিরহানলে ।
বিচ্ছেদ জ্বালায় কি যাতনা, সেই জানে যার যায় জ্বলে ।।
১) যার হারায় পরান ধন তারে বিনে বিফল জীবন,
অভাগিনীর সাধনের ধন, পাব আর কোথা গেলে-
জ্বালা জুড়ায় কোথা গিয়ে -- সে - বিনে মোর শূন্য হিয়া,
তোরা সখী দেখ ধরিয়া, বুক জ্বলে যায় অনলে।।
২) কোন পথে গিয়াছে সখী, তোরা কেউ দেখেছ নাকি,
ওই রুপে যেই দিলাম আখি, পাগল বলে পাগলে ।
আর কিছু লাগেনা ভালো, আসা-যাওয়া বৃথা গেল ,-
এমন তার মত না হলেও, সে কেন আমায় ফেলে ।।
৩) ডাকিয়া যে দয়া করে, দয়াল বলে কে কয় তারে,
না ডাকিলে দয়া করে, তাই দিনের দয়াল বলে ।
তুমি কি তাই দিলে ফাঁকি , ডাকি বা না তোমায় ডাকি ,
পতিত পাবন নামে কি , কালী পেল কলি কালি ।।
৪) গোসাই মহেষের ভারতী , যোগীর হৃদয় ন তিষ্ঠতি ,
শোন রে মন্মথ দুর্মতি , ডাকরে হরি বলে ।
ছিল রে যে ব্রজে রাখাল , সেই এলো মোর পরান গোপাল ,
শচীসুত নন্দদুলাল , হলো যশোমন্তের ছেলে ।।
( শ্রী মন্মথ রঞ্জন মিস্ত্রি )
১০৪নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ
তোরা প্রেমের খেলা খেলবি যদি যাবি ওড়াকান্দি ।
যত মতুয়া আর সাধু মহন্ত , প্রেমমধু পানে তারা হলো বন্দি ।।
১) হরিচাদের কৃপাবলে , প্রেমের আলো হৃদয় জ্বলে ।
ও তার প্রেম রজ্জু ভক্তি বলে ,রাখলি চরণে বান্ধি ।।
২) নামামৃত পান করিলে , ক্ষুধা তৃষ্ণা যায় গো ভুলে ।
শুনে যেজন হয় না চেতন ,অবশেষে কারাদন্ডী ।।
৩) রসনাতে লয় হরিনাম , অন্তিমে সে যায় গোলক ধাম ।
দিবানিশি প্রেমের ডোরে , রাখলি শ্রীগোপাল বান্ধি ।।
৪) প্রেমের বন্যা বহে তথায় , কঠিন পাষাণ হৃদয় গলে যায় ।
ওরে প্রেম তরঙ্গে , ধুলা অঙ্গে , যত পুরুষ-নারী উঠল কাদি ।।
৫) গোসাই রসিকচাঁদ সে প্রেমের খনি , পেয়ে গোপাল গুণমণি ।
অধম যাদবের তোর যায় না সন্দ , রইয়াছ কামবানে বান্ধি
( শ্রী যাদব হালদার )
১০৫ নং গান, তাল -- কাহারবা, সুর --রাগিনি
হে গুরু চরণ তরী, পার করে নাও দয়া করি।
পার্ক হাটে বসে কান্দি নায়ক হাতে পারের কড়ি।।
১) ঘাটে এসে একা বসি, নয়ন ধারায় অঙ্গ ভাসি, কেহ নাইরে মোর তালাসী।
ছিল আত্মীয়-স্বজন, মায়ার বাঁধন, কেটে দেও মায়া ডুরী।।
২) সাথের সাথী ছিল যারা, আমায় ফেলে গেল তারা, রলেম পরে কপাল পোড়া।
নয়ন জলে ভাসে বয়ান, একা রলেম এ পারে পড়ি।।
৩) এ জনম যায় বিফলে, হৃদয় দুঃখ উঠছে জ্বলে, হতেম যদি ঘটের শিলে।
মত জুড়াইতাম নয়নের সেই তপ্ত বারি।।
৪) গোসাই রসিক চাঁদের ভক্ত যারা, পার হইয়ে গেল তারা, হরি নামের ধ্বনি হৃদয় পোরা ।
তারা চলেছে সবাই দুহাত তুলি, প্রেমের নিশান করে ধরি ।।
৫) অধম যাদব হাই ছেড়ে , কেঁদে বলছে ধীরে ধীরে, নিয়ে যাও আমায় পারে ।
তুমি রেখো আমায় চরণ তলে, আর যেন আসিনা ফিরে ।।
( শ্রী যাদব হালদার )
১০৬নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ
আপন কর্মদোষে ভূগী ।
আমি জন্মাবধি গো ,আমার মন হলো না প্রেম বিরাগী
১) মন মানেনা আমার শাসন , আমি কারে নিয়ে করব সাধন ।
আমি কাঁচ পেয়ে ভুলেছি কাঞ্চন গো , আমি রং পেয়ে হয়েছি সুখী ।।
২) এমন দয়াল অবতারে হরি , আমার কিছু হল নারে ।
এমন অপবিত্র দুরাচারে গো --হরি কৃপা হবে কিসের লাগি ।।
৩) অসীম প্রেম করুনা তোমার , হরি এক বিন্দু প্রেম দিবে কি তার ।
তোমার সিন্ধু প্রেমের বিন্দু পেলে গো , ধন্য হত এ নারকি ।।
৪) দয়াল গোপালের চাঁদের বাণী , নগা যদি কর হরি নামের ধ্বনি ।
তবে প্রাপ্ত হরি প্রেম আহ্লাদিনী গো , দয়াল গুরুচাঁদ তরায় পাতকি ।।
( নগেন্দ্রনাথ কর )
১০৭নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ
ব্যথা কার কাছে জানাই দরদী -- বেথিত কোথা খুঁজে পাই ।
নিবেদিত বুঝিয়ে স্থান নাই ।।
১) ব্যথা জানাবার তরে এলেম তোমার দুয়ারে, পরান খোঁজে তোমারে ।
দয়াল তোমারি উদ্দেশ্যে ফ্রী আমি দেশে বিদেশে, এবেশে ঘুরিয়া বেড়াই ।।
২) অব্যক্ত এ মনের বেদনা, বুঝি আর বলা হল না, আমি পাপী একজন ।
তুমিও কি করিবে ছলনা, পাপী বলে পায়ে ঠেলনা, কামনা ঐ চরণে জানাই।।
৩) আমার এমন ভক্তি নাই, যাতে তোমার দয়া পাই, জানি তোমার দয়া অন্ত নাই।
মূর্খ মুখে ভাষা দিতে, তোমার করুণা এ জগতে, আমাতে যে ভক্তি শক্তি নাই।।
৪) তব দয়া সর্বজীবে, আমি পাপী এই ভবে, কু-স্বভাবে সকলি হারাই।
গেল না মোর স্বভাবের দোষ, তারপরে আর করিব রোষ , তব দয়া আমাতে কি নাই।।
৫) সাধু সঙ্গ নাহি করি, হলেম আমি পাপাচারী, হরি তোমাকে জানাই।
কবে বা ওই সঙ্গ পাব, পদরজঃ অঙ্গে মাখব, প্রাণ জুড়াব হরি ভক্তের ঠিই।।
৬) মুখে নাই কোন ভাষা, মন্মথ করে দুরাশা, দিও ভাষা জগত গোসাই।
তোমার দয়াময় নাম শুনিয়ে, আছি দয়াল পথ চেয়ে, কেবল চরণে ঠাই চাই।।
( শ্রী মন্মথ ঞ্জন মিস্ত্রী
১০৮নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ
কেমনে রইলিরে বসিয়া , কি বলিয়ে এসেছিলি মন, তারে বুঝাবি কি কইয়া ।।
১) বাজি করে তোরে পাইয়া, তার কর্ম সে যায় কোরিয়া ,
তুই যে রলি সে দিকে চাইয়া , সে গেল সরিয়া ।
কিছু করার সাধ্য নাই তোর , মোহিত হইয়া,
ও তোর আসল মাল সব নিয়া গেল , চোক্ষে ধুলি দিয়া ।।
২) পাছের বেড়া নাই তোর মোটে , সামনের দুয়ার দিচ্ছ এটে।
মনিকোঠার বেড়া কেটে, চোর ঢুকলো আসিয়া ।।
৩) যারা ছিল সাথী সম্বল, তোরে তো পাইয়া ভম্বল ,
সব নিয়া করছে পলায়ন, সুযোগ পাইয়া,
নিজের ধন তুই নিজের হাতে, দিয়ে আছো সাধিয়া।
তোর সারা জন্মের কামাই দিলি, এক কালে খায়াইয়া ।।
৪) মনে ভাবনা এই বুঝি সুখ, সামনে কত আছেরে দুঃখ,
শেষে বলবে বিধি বৈ - মুখ কত কষ্ট পাইয়া ।
দুখের বোঝা আগে কিছু, মাথায় লও বান্ধিয়া,
ও সেই কর্ম গুণে সুখ পাবি তুই, শেষ কালে যাইয়া ।।
৫) গোপাল চাঁদের মধুর বাণী, হরিনাম লও দিন- রজনী,
তবে পাবি প্রেমের খনি, যাসনারে ভুলিয়া ।
নিরুপায়ের উপায় আমার, গুরুচাঁদ আসিয়া,
কত দুঃখী তাপী পার করে নেয়, রসিক রইল চাইয়া ।।
১০৯নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ
হরি ভক্তগনের শ্রীচরণে নিবেদন করি ।
আমায় এই আশীর্বাদ করস হবে যেন গোপালচাঁদ বলে মরি ।।
১) বাঁচিয়া কি ফল আছে আর , যারে ধরে বলে মনের সুখে বেঁধেছিনু ঘর ।
আমি মনের মত হলাম না তার , তাইতে পেলাম না শ্রীচরণ তার ।।
২) মনে এই ছিল অভিপ্রায় , শুচি হয়ে জীবন কুসুম দানিব তার পায় ।
আমার সে ভাগ্য হল না উদয় , তবে কেন মিছে এ জীবন ধরি ।।
৩) কুকর্মে নামে অভিশাপ , ভক্ত সঙ্গের ভাব বাতাসে আসে অনুতাপ ।
তাদের প্রেম পরশে নাশে সব পাপ , চিত্ত নির্মল হয় দু'নয়ন ঝরি' ।।
৪) ভগবান ও ভক্ত অভিন্ন , ভক্তের জন্য যুগে যুগে হন অবতীর্ণ ।
আমি দীন হীন অতি জঘন্য , তোমাদের সঙ্গে লও ধন্য করি ।।
৫) ভূপালের শুভ সমাচার ,হরি এসে গোপাল রূপে হল অবতার ।
তোরা আয় কে যাবি পারে এবার , এ সময় বিলম্ব হবে ভারী ।।
( শ্রী জগবন্ধু মিস্ত্রী )
১১০নং গান, তাল-কাহর্বা, রাগ-বেহাগ
এমন দিন যে আর পাবি মন , সে ভরসা করিস কিসে ।
ও তোর আজকাল করে গেল রে কাল , কালের কলে ধরল পিশে ।।
১) দিন গেল তোর হল না হুস , তাই ভাবি তুই কিসের মানুষ ।
কাল ঘুমে দিন গেলরে মিছে , ঐ শোন জয় গোপালচাঁদ নামের ধ্বনি ,
করছে পুরুষ-নারী মিশে ।।
২) ভবের মানুষ কয়বার আসে? আসে কেবল ভাব বাতাসে ।
জগৎ যখন পোড়ায় বিষে্ , ও তার ভাবের বন্যায় জগত ডুবায় --
ফুল ফল ফুটে শুকনা শীষে ।।
৩) এমন দিনে রইলি কানা স্বভাবে তার নাই নিশানা , ঘুরিস ফিলিংস কূ উদ্দেশ্যে ।
তোর এমনি স্বভাব পশুত্ব ভাব তোর তফাৎ নাই গরু মহিষে ।।
৪) শোন বলি ওরে বিকেল কি আছে তোর পারের সম্বল , পার হওয়া বল করিস মিছে ।
যদি হতে চাস পার হওগে এবার , গোপালচাঁদের পায়ের নিচে ।।
৫) গোপালচাঁদ কয় মহানন্দ এখন তোর নয়ন বন্ধ , অলস হয়ে রলি বসে ।
ও তোর কর্ম মন্দ তাহাতে মন্দ দিন গেল বিন্যাস হরিশে ।।
( শ্রী মহানন্দ হালদার )
১১১ নং গান
ওমা লক্ষীগন তোমরা স্বামী পদে রাখিও দুইমন ।
স্বামী গুরু মাতা পিতা স্বামী যে সর্বস্ব ধন ।।
১) স্বামীর পদে আছে মাগো তীর্থ করন আগনন ।
তোমরা ঐ চরণ পূজিলে পাবা-মাগো গয়া কাশী বৃন্দাবন ।।
২) আর এক কথা শুন মাগো বেহুলার করন ।
ওসে মরা পতি ভেলায় লয়ে বৈদেশে করে গমন ।।
৩) ছয় মাস ঘুরে সতী পতির কারণ ।
ওসে ছয় মাস ঘুরে পেল গোদাবরীর দরশন ।।
৪) বেহুলা সতীর করুন কান্নায় পদ্মার আগমন ।
ও সে পদ্মাবতী বেহুলা সতীর পতি সস্মুখে করে জিয়ন ।।
৫) গোসাই রাজেন বলে হরেন ধরগে রসিক চরণ ।
ও তোর ঐ চরণে আছে সকল গয়া কাশী বৃন্দাবন, ঘুরে মরিস অকারণ ।।
স
স মা প্ত
প্ত
PDF by :- Dilip Majumdar
Mobile :- 9831650644 / 6291062845